

বছরের শেষ এবং নতুন বছরের শুরুটা রেশন ডিলারদের জন্য সুখকর হল না। তার কারণ, খুব শীঘ্রই বন্ধ হতে চলেছে কলকাতা প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা (পিএমজেকেএওয়াই) প্রকল্প। সোমবার এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রের এই হঠকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের রেশন ডিলাররা।
সূত্রের খবর, ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের তরফে মঙ্গলবার জয়পুরে একটি বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পিএমজেকেএওয়াই প্রকল্প বন্ধের প্রতিবাদে আগামী ১১ জানুয়ারি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন রেশন ডিলাররা।
এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানান, বরাদ্দ কমিয়ে নয়া প্রকল্পে গরিব মানুষকে বঞ্চনা করল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার।এই প্রকল্পে গরিব মানুষ যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হবেন, তেমনই আমরাও ক্ষতির সম্মুখীন হব। তাই আমাদের ক্ষোভের কথা কেন্দ্রের কাছে পৌঁছে দিতেই আমরা প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছি।
রেশন ডিলারদের অভিযোগ, প্রতি কুইন্টাল রেশন দ্রব্য বিক্রি করলে তাঁরা অতিরিক্ত কমিশন পান। সেই সঙ্গে খাদ্যসামগ্রী শেষ হয়ে গেলে যে বস্তা পড়ে থাকে, তা বিক্রি করে অতিরিক্ত আয় হয়। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র যদি প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়, তাহলে একদিকে রেশন ডিলাররা কমিশন থেকে বঞ্চিত হবেন। অন্যদিকে, খালি বস্তা বিক্রি করে অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ হাতছাড়া হবে।
তাঁরা আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি এই প্রকল্প বন্ধ করে দেয় তাহলে দেশের ৮০ কোটি মানুষ আর প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৫ কিলোগ্রাম গম পাবেন না। এক্ষেত্রে দেশের গরীব মানুষ যেমন রেশন থেকে বঞ্চিত হবেন, তেমনই নিজেদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হবেন রেশন ডিলাররাও।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে অন্যান্য দেশের মত এই দেশেও কোভিডের প্রাদুর্ভাব ক্রমশ ভয়াবহ আকার নেয়। সেই পরিস্থিতিতে এপ্রিল মাস থেকে পিএমজেকেএওয়াই প্রকল্পটি চালু করে মোদী সরকার। যেটি চলতি বছরের ডিসেম্বরেই বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রক।
এই প্রকল্পের অধীনে গ্রাহকদের মাথাপিছু ৫ কেজি করে অতিরিক্ত খাদ্যশস্য বিনাপয়সায় দেওয়া হত। এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরকারের বছরে প্রায় ১ লক্ষ ৬৩ হাজার কোটি টাকা বেঁচে যাবে। তবে, দরিদ্র মানুষের জন্য জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন মেনে অন্য প্রকল্পে বিনামূল্যে যেমন রেশন দেওয়া হত, সেটা চলবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন