বিহার বিধানসভায় 'মহাজোট' সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার দিনেই রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (RJD) নেতাদের বাড়িতে হানা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সূত্রের খবর, এদিন পাটনা সহ প্রায় ২৪টি জায়গায় আরজেডি নেতাদের বাড়িতে হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা আধিকারিকরা।
ইউপিএ-১ সরকারের আমলে রেলমন্ত্রী ছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব। সেই সময় জমির বিনিময়ে রেলে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে।
আজ বিহার বিধানসভায় আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবেন নীতিশ কুমার-তেজস্বী যাদবরা। তার আগে আরজেডি নেতাদের উপর ক্রমশ চাপ বাড়ানো প্রসঙ্গে তেজস্বী যাদব জানিয়েছেন, বিধানসভায় এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
বিহারের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা লালু প্রসাদ যাদবের স্ত্রী রাবড়ি দেবী বলেন, "ওরা ভয় পেয়েছে। নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিজেপি ছাড়া সব দল আমাদের পাশে। আমাদের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। আমাদের ভয় দেখাতে সিবিআই হানা দিয়েছে। কিন্তু আমরা ভয় পাব না। এই প্রথম বার যে এমন হচ্ছে, তা নয়।"
সূত্র মারফত জানা গেছে, আরজেডি নেতা আহমেদ আশফাক করিম, ফৈয়জ আহমেদ, সুবোধ রায় এবং সুনীল সিংহের বাড়িতে হানা দিয়েছে সিবিআই। গুরুগ্রামে তেজস্বী ও তাঁর সহযোগীদের মালিকানাধীন আরবান কিউব ৭১ নামের একটি মলেও তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ, এই মলটি দুর্নীতির টাকায় কেনা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সুনীল সিংহ বলেন, "এটা সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘটানো হচ্ছে। এর কোনও মানে হয় না। ভাবছে, ভয় পেয়ে আমাদের বিধায়করা ওদের পক্ষে চলে যাবেন।"
আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা-র কথায়, "সিবিআই-ইডি হানা বলা অর্থহীন। আসলে এটা এখন বিজেপি-র হানা। ওই দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা এখন বিজেপি-র অধীনে কাজ করে। বিজেপি-র চিত্রনাট্য মেনেই তাদের কাহিনি এগোয়। আজ আস্থাভোট, অথচ কী হচ্ছে এখানে? এটা এখন গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।"
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মে মাসে সিবিআই-র তরফে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। যাতে বলা হয়, ২০০৪-২০০৯ পর্যন্ত রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লালু প্রসাদ যাদব জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধা পেয়েছিলেন। এছাড়াও রেলের 'গ্রুপ ডি' পদে তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী, কন্যা মিসা যাদব ও হেমা যাদব ছাড়াও বেশ কিছু অযোগ্য ব্যক্তিদের জমির বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছিল।
সিবিআইয়ের তদন্তে জানা গেছে, পাটনায় প্রায় ১,০৫,২৯২ বর্গফুট জমি লালু প্রসাদ যাদবের পরিবারের সদস্যরা অধিগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ বিক্রেতাদেরই টাকা নগদে পরিশোধ করতে দেখা গেছে। এসব জমির বর্তমান মূল্য প্রায় ৪.৩৯ কোটি টাকা।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।