৬ নভেম্বর প্রথম দফার ভোট হয়ে যাবার পর ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও কেন মহিলা এবং পুরুষভিত্তিক ভোটদানের তথ্য প্রকাশ করা হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। নির্বাচন কমিশনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে তেজস্বী যাদব প্রশ্ন তোলেন, “এখনও কেন এই তথ্য লুকিয়ে রাখা হয়েছে?”
রবিবার পাটনা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তেজস্বী যাদব বলেন, প্রথম দফার ভোটের পর ৩ দিন কেটে গেছে। যদিও তিন দিন পরেও নির্বাচন কমিশন মহিলা এবং পুরুষদের ভোটদানের হার প্রকাশ করেনি। কেন এখনও এই তথ্য লুকিয়ে রাখা হয়েছে? রাস্তায় ভিভিপ্যাটের স্লিপ পাওয়া যাচ্ছে। সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই এইসব ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে হবে। কেন এই তথ্য এখনও প্রকাশ করা হচ্ছে না তা জানাতে হবে।
আগামীকাল মঙ্গলবার বিহারে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। ২০ জেলার ১২২ আসনে দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ হবে। এর আগে ৬ নভেম্বর প্রথম দফায় ১৮ জেলার ১২১ আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম দফায় বৈধ ভোটার ছিলেন প্রায় ৩.৭৫ কোটি। ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে আগামী ১৪ নভেম্বর।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৬৪.৬৬ শতাংশ। যদিও নির্বাচন কমিশনের ভোটার টার্ন আউট অ্যাপ-এর তথ্য অনুসারে প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৬৫.০৮ শতাংশ। অর্থাৎ দুই হিসেবে পার্থক্য আছে প্রায় ০.৪২ শতাংশের।
প্রথম দফার নির্বাচন প্রসঙ্গে তেজস্বী যাদব জানিয়েছেন, প্রথম দফার ভোটে মহাজোটের প্রতি সমর্থনের জোরালো ঢেউ দেখা গেছে, আশা করা যায় দ্বিতীয় দফাতেও তা অব্যাহত থাকবে। "এবার, বিহারের মানুষ ঐক্যবদ্ধ এবং নতুন নেতৃত্বকে সুযোগ দেওয়ার মেজাজে রয়েছে" বলেও তিনি জানান।
এর আগের দিন আরজেডি-র পক্ষ থেকে সমস্তিপুরের স্ট্রং রুমে প্রায় আধ ঘন্টা ধরে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ থাকার অভিযোগ জানানো হয়েছিল। আরজেডি-র পক্ষ থেকে দলের এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়, “নির্বাচন কমিশন এবং স্থানীয় প্রশাসন, দুর্নীতিতে ডুবে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ব্যাটারি কম থাকা, টিভির স্লিপ মোড বা জেনারেটরের অভাবের মতো অযৌক্তিক অজুহাত তৈরি করছে। এই আধিকারিকদের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সততা শূন্য!”
অন্যদিকে গতকালই এক ভিডিও বার্তায় তেজস্বী যাদব বলেন, "প্রথম দফার ভোটগ্রহণের পর, এনডিএ শিবিরে এক গভীর হতাশার পরিবেশ বিরাজ করছে। পরাজয়ের ভয়ে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দলীয় কর্মীদের সাথে দেখা করছেন এবং ফোনে হুমকি দিচ্ছেন। তিনি যে হোটেলে থাকেন সেই হোটেলটি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং গভীর রাতে কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠাচ্ছেন।
বর্তমানে, এনডিএ-র বাসভবন থেকে, মুখ্যমন্ত্রীর অজান্তেই, বিজেপির মিত্রদের খপ্পরে পড়া অত্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা, কর্মকর্তাদের ফোনে ফোন করছেন এবং ভোটের দিন পর্যন্ত মহাজোটের কর্মীদের পুলিশ দিয়ে আটক করার এবং শক্তিশালী মহাজোট-সমর্থিত বুথগুলিকে বিরক্ত করার নির্দেশ দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের কর্মকর্তারা সভা করছেন।
পরিবর্তন অনিবার্য, তাই কর্মকর্তারা এমনকি আমাদের ফোনকারীদের স্ক্রিনশটও পাঠাচ্ছেন। বিহার সরকারের সৎ কর্মকর্তাদের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে সংবিধান অনুসারে তাদের দায়িত্ব পালন করা উচিত।
দুই গুজরাটি যে কোনও মূল্যে বিহার দখল করতে চায়। তারা বিহারকে উপনিবেশ করতে চায়। সংবিধানের বিরুদ্ধে কাজ করা নির্লজ্জ এবং বিবেকহীন শাসক নেতাদের কঠিন শিক্ষা দেওয়ার জন্য বিহারের জনগণ একসাথে দাঁড়িয়েছে। প্রজাতন্ত্রের জননী বিহারে তাদের ভোট চুরি কখনই সহ্য করা হবে না। জনগণ যেকোনো উপায়ে, যেকোনো উপায়ে তাদের ভোট চুরি এবং গণতন্ত্রের ডাকাতি বন্ধ করতে প্রস্তুত।"
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন