

ভারতীয় ন্যায় সংহিতা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম। এদিন চিদাম্বরম বলেন, দেশের বর্তমান আইনব্যবস্থাকে ‘বুলডোজিং’ করে নতুন তিন আইন চালু করে দেওয়া হল বিস্তারিত আলোচনা ও বিতর্ক ছাড়াই। প্রসঙ্গত, আজ থেকেই দেশজুড়ে কার্যকর হয়েছে তিন নতুন আইন – ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম। ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বা ভারতীয় দন্ডবিধি আজ থেকেই আর কার্যকরী নয়।
সোমবার সকালে এক এক্স বার্তায় (পূর্বতন ট্যুইটার) পি চিদাম্বরম বলেন, নতুন আইনের ৯০ থেকে ৯৯ শতাংশ কাট পেস্ট করা হয়েছে। আইপিসি, সিআরপিসি এবং ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্টকে প্রতিস্থাপন করার জন্য তিনটি ফৌজদারি আইন আজ কার্যকর হয়েছে। বর্তমান তিন আইনে কয়েকটি সংশোধন এনেই এই কাজ করা যেত।
তিনি আরও লেখেন, নতুন আইনে কিছু নতুন বিষয় আনা হয়েছে এবং আমরা সেগুলিকে স্বাগত জানিয়েছি। যদিও এগুলো সংশোধনী হিসেবেই চালু করা যেত।
চিদাম্বরম বলেন, অন্যদিকে, বেশ কিছু বিপরীতমুখী বিধান রয়েছে। এমন কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে যা প্রাথমিকভাবে অসাংবিধানিক। সংসদ সদস্য যারা স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন তারা তিনটি বিলের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। যদিও সরকার এই ভিন্নমতের বিষয়ে কোনও সমালোচনার জবাব দেয়নি। সংসদে এই বিষয়ে কোনো বিস্তারিত বিতর্কও হয়নি।
চিদাম্বরম জানিয়েছেন, আইন বিশারদ, আইনজীবী সমিতি, বিচারক ও আইনজীবীরা অসংখ্য লেখায় ও সেমিনারে তিনটি নতুন আইনের গুরুতর ঘাটতিগুলো তুলে ধরেছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে কেউ এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। এই পদক্ষেপ বর্তমান তিনটি আইনকে বুলডোজ করে পর্যাপ্ত আলোচনা ও বিতর্ক ছাড়াই তিনটি নতুন বিল দিয়ে প্রতিস্থাপন করার আরেকটি ঘটনা।
তাঁর মতে, প্রাথমিক ভেবে এই আইন ফৌজদারি বিচার প্রশাসনকে বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফেলে দেবে। এছাড়াও বিভিন্ন আদালতে আইনের প্রতি অসংখ্য চ্যালেঞ্জ করা হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে, সংবিধান এবং ফৌজদারি আইনশাস্ত্রের আধুনিক নীতিগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য তিনটি আইনে আরও পরিবর্তন করতে হবে।
উল্লেখ্য আজ থেকেই ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর এবং দ্য ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট আর কার্যকরী থাকছে না। যদিও এর আগে পর্যন্ত যা যা পুরোনো আইনগুলির ভিত্তিতে যা যা অভিযোগ দায়ের হয়েছে সেসবের ক্ষেত্রে পুরোনো আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন