

পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইকে ছ’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি অতুল এস চান্দুকরের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। এদিন অভিযুক্ত অয়ন শীলের পক্ষ থেকে জামিনের আবেদন জানানো হলেও আদালত তা খারিজ করে দেয়।
শুনানি চলাকালীন বিচারপতিদের মন্তব্য, ‘‘ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। হাজার হাজার যুবকের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর।’’ ফলে আদালতের মতে, আপাতত অয়ন শীলকে জামিন দেওয়া সম্ভব নয়।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অয়ন শীলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তদন্ত চলাকালীন তাঁর সল্টলেকের অফিসে হানা দিয়ে প্রচুর উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট উদ্ধার করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। তখনই পুরসভায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের হদিস মেলে। অভিযোগ, অয়নের সংস্থা পুর নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর মূল্যায়নের দায়িত্বে ছিল এবং সেই জায়গাতেই দুর্নীতি হয়েছে।
অয়নের আইনজীবী জানান, বর্তমানে মোট ১৬টি পুরসভায় দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। এর মধ্যে একটি পুরসভার তদন্ত শেষ হয়েছে এবং একটি চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। তবে বাকি তদন্ত শেষ হতে কত সময় লাগবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই শর্তসাপেক্ষে জামিনের আবেদন জানানো হয়। অয়নের আইনজীবীর যুক্তি ছিল, এসএসসি নিয়োগ মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যেমন জামিন পেয়েছেন, অয়নকেও তেমন সুযোগ দেওয়া হোক।
তবে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে সেই দাবির কড়া বিরোধিতা করা হয়। কেন্দ্রীয় সংস্থার আইনজীবী জানান, তদন্তে প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। দুর্নীতির পরিসর এতটাই বিস্তৃত যে এখন জামিন দেওয়া হলে তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়তে পারে।
বিচারপতিরা সিবিআইকে জিজ্ঞাসা করেন, তদন্ত শেষ হতে কত দিন লাগতে পারে। অয়নের আইনজীবীর পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়, তিন মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হোক। কিন্তু আদালত সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ছ’মাস করে দেয়। বেঞ্চ জানায়, ‘‘ছ’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করবে সিবিআই।’’
ফলে আপাতত অয়ন শীলকে জেলেই থাকতে হবে। তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ছ’মাস পরে ফের জামিনের আবেদন করা যেতে পারে এবং তখন পরিস্থিতি বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শুনানির শেষে অয়নের আইনজীবী মামলা প্রত্যাহারের অনুমতি চান, যা আদালত মঞ্জুর করেছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন