Assam: সরকারকে চড়া দামে PPE কিট বিক্রির অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রীর সংস্থার বিরুদ্ধে

পর্যাপ্ত পরিমাণে কিট দিতে না পারায় সরকার বরাত বাতিল করে দেয় এপ্রিল মাসে। তবে আসাম সরকারের পক্ষ থেকে ঐ দুই সংস্থার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এপ্রিল মাসেই ফের টেন্ডার পায় ঘনশ্যামের কোম্পানি।
সপরিবারে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
সপরিবারে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ফাইল চিত্র - সংগৃহীত

অতিমারীর সময়কে হাতিয়ার করে কার্যত নিজের সম্পত্তি বাড়িয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সম্প্রতি দ্য ওয়ার এবং দ্য ক্রস কারেন্ট নামক দুটি সংবাদ সংস্থার রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে দেশ জুড়ে যখন মৃত্যুমিছিল, অক্সিজেনের খোঁজে মানুষের হাহকার করছে - সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে নিজেদের সম্পত্তি বাড়িয়েছেন আসামের বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা। আর এই তালিকায় নাম রয়েছে খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার। অভিযোগ, মূলত পিপিই কিটকে সামনে রেখে কেলেঙ্কারির করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই তথ্যই উঠে এসেছে নিউজ পোর্টালের আরটিআই রিপোর্টে।

সূত্রের খবর, ২০২০ সালে লকডাউন ঘোষণার আগেই মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী রিনিকি ভুঁইঞা শর্মার সংস্থা জেসিবি ইন্ডাস্ট্রিজকে প্রায় ৫ হাজার পিপিই কিটের বরাত দেওয়া হয় স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে। আর তাঁর এক ঘনিষ্ঠের কোম্পানিকে বলা হয় ২০ হাজার পিপিই কিট ও স্যানিটাইজার প্রদান করতে। এর মাধ্যমেই তাঁরা কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেছন বলেই অভিযোগ। তবে এই নিয়ে মুখ খোলেননি আসামের মুখ্যমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে রিনিকি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ঘনশ্যাম দাস ধানুকার প্রায় ৯৯০ টাকায় পিপিই কিট বিক্রি করে আসাম সরকারের কাছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অন্যান্য সংস্থার থেকে প্রায় ৩৯০ টাকা বেশি দরে পিপিই কিট বিক্রি করেছে হিমন্তের স্ত্রীর কোম্পানি।

শুধু তাই নয়, সরকারের পক্ষ থেকে জেসিবি ইন্ডাস্ট্রিজকে চিঠি দিয়ে জানায় দুই কিস্তিতে ৫ হাজার পিপিই কিট সরবরাহ করতে। ঘনশ্যামকেও ঠিক একই ভাবে ২০ হাজার পিপিই কিট সরকারের কাছে দিতে বলা হয়। কিন্তু দুই সংস্থাই সেই পরিমাণ সরঞ্জাম প্রদান করতে ব্যর্থ হয়। পাশাপাশি নর্থ-ইস্ট সার্জিকাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামে এক সংস্থা সরকারের কাছে ঠিক সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে জরুরীকালীন সরঞ্জাম তুলে দেয়।

প্রসঙ্গত, পর্যাপ্ত পরিমাণে কিট দিতে না পারায় সরকার তাঁদের বরাত বাতিল করে দেয় এপ্রিল মাসে। তবে আসাম সরকারের পক্ষ থেকে ঐ দুই সংস্থার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সকলকে চমকে দিয়ে এপ্রিল মাসেই ফের টেন্ডার পায় ঘনশ্যামের কোম্পানি। তবে পূর্বের মূল্য (৯৯০) থেকে অধিক দামে (১৬৮০) বিক্রি করে সরকারের কাছে। আসাম সরকার সেই চড়া দামেই পিপিই কিট কেনে। যার বাজারমূল্য ছিল ১০ কোটি ৮৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ৮৫০ টাকা।

রাজনৈতিক মহলে এখন প্রশ্ন উঠছে, মন্ত্রীর স্ত্রী-র সংস্থা পিপিই কিট দিতে ব্যর্থ হলেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না? যদিও এ বিষয়ে রিনিকি ভুঁইঞা শর্মা সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন কর্পোরেট সংস্থার একটা দায়বদ্ধতা থাকে সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখা। সেইখান থেকেই সরকারকে কিট দান করা হয়েছিল। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, তাহলে ধানুকার কোম্পানির টেন্ডার বাতিল কেন করা হল? আবার পরেই সেই সংস্থাকেই পিপিই কিটের টেন্ডার দেওয়া হল কোন যুক্তিতে?

আরটিআই-র রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিলের মধ্যে বিপুল পরিমাণে কিট পেয়েছিল হিমন্তের সরকার। তারপরেও চীন থেকে ৫০ হাজার কিট আমদানি করা হয়। ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন বিশ্ব শর্মা। কিন্তু পূর্বেই ৬৫ হাজার কিট পাওয়ার পরেও কেন চীন থেকে আমদানি করতে হল তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

তবে এমন কেলেঙ্কারি প্রথম নয়। এর আগেও মন্ত্রীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০০৯ সালে কংগ্রেসে থাকার সময় জমিহীন মানুষের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩০ বিঘা জমি কম দামে কিনেছিলেন। তখন তিনি তদন্তের জন্য রাজী হননি। বিরোধী মহলে গুঞ্জন চলছে এই পিপিই কিট দুর্নীতিতেও তদন্ত করতে চাইবেন না মন্ত্রীর স্ত্রী রিনিকি ভুঁইঞা শর্মা।

সপরিবারে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
Assam: উদ্ধারকর্মীর পিঠে চেপে বন্যাকবলিত এলাকা দর্শন BJP বিধায়কের, নিন্দার ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in