
* ক'দিন ধরেই দেশজুড়ে আমাজন ও ফ্লিপকার্টের বিভিন্ন ওয়ারহাউসে তল্লাশি অভিযান চলছে।
* একাধিক জায়গা থেকে গুণমান না পেরোনো বহু জিনিস বাজেয়াপ্ত।
* এই ঘটনার কথা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB)।
দুই ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজন এবং ফ্লিপকার্টের দিল্লির গুদামে রাতভর তল্লাশি চালালো ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (BIS)। ১৫ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে এই দুই সংস্থায় তল্লাশি অভিযান চলে। পিআইবি-র বিবৃতি অনুসারে এই দুই সংস্থার বেশ কিছু পণ্য গুণমান পেরোতে ব্যর্থ হওয়ায় সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB) -র বিবৃতি অনুসারে, বিআইএসের অভিযানে আমাজনের ওয়ারহাউস থেকে গিজার, ফুড মিক্সার এবং বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সহ ৩,৫০০-এরও বেশি জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ পণ্যে বাধ্যতামূলক আইএসআই চিহ্ন ছিল না অথবা নকল আইএসআই চিহ্ন লাগানো ছিল। বাজেয়াপ্ত জিনিসের মোট আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।
অন্যদিকে ফ্লিপকার্টের সহযোগী সংস্থা ইন্সটাকার্ট সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের ওয়ারহাউস থেকেও প্রচুর পরিমাণে স্পোর্টস শ্যু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যে পণ্য ক্রেতাদের কাছে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত ছিল। যদিও এই পণ্যের ক্ষেত্রেও কোনও বৈধতা বা ‘প্রোডাক্ট সার্টিফিকেশন’ ছিল না। ছিল না পণ্য উৎপাদনের তারিখ। এখান থেকে আটক করা হয়েছে প্রায় ৫৯০টি স্পোর্টস শ্যু। এইসব পণ্যের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা।
গত সপ্তাহে তামিলনাড়ুর থিরুভাল্লুর জেলায় ফ্লিপকার্টের যে ওয়ারহাউসে তল্লাশি চলেছে সেখান থেকে ৩,৩৭৬ টি পণ্য আটক করা হয়েছে। যার মধ্যে আছে ফ্লাস্ক, মেটালিক ওয়াটার বটল, সিলিং ফ্যান, খেলনা সহ অন্যান্য সামগ্রী। বাজেয়াপ্ত ওই পণ্যের মূল্য ছিল প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা।
এর আগে গত সপ্তাহে বিআইএস-এর পক্ষ থেকে তামিলনাড়ুতে এই দুই সংস্থার ওয়ারহাউসে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানেও বাজেয়াপ্ত করা বহু পণ্যের গুণমান সংক্রান্ত ছাড়পত্র ছিল না। এছাড়াও সংস্থার গুরগাঁও, ফরিদাবাদ, লখনৌ ওয়ারহাউসেও তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে।
রয়টার্স-এর তথ্য অনুসারে, ভারতের ই-কমার্স বাজারে এই দুটি কোম্পানির আধিপত্য রয়েছে। পরামর্শদাতা সংস্থা বেইনের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে এর মূল্য ৫৭ বিলিয়ন থেকে ৬০ বিলিয়ন আমেরিকান ডলারের মধ্যে ছিল এবং অনুমান অনুসারে ২০২৮ সালের মধ্যে যা ১৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ঘটনার পর অ্যামাজন ইন্ডিয়ার মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “অ্যামাজন ভারতে একটি মার্কেটপ্লেস পরিচালনা করে। আমরা অ্যামাজনে পণ্য তালিকাভুক্ত এবং বিক্রি করা বিক্রেতাদের প্রযোজ্য আইন, নিয়মকানুন এবং অ্যামাজনের নীতি মেনে চলতে বাধ্য করি। এক্ষেত্রে কোনও শর্ত লঙ্ঘিত হলে সেই বিষয় আমাদের নজরে আসার পর আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।”
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরেই বিআইএসের পক্ষ থেকে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। সংস্থার কাছে খবর আসে, দুই ই-কমার্স সংস্থা ফ্লিপকার্ট ও অ্যামাজন নিম্নমাণের ভুয়ো পণ্য বিক্রি করছে। যেসব পণ্যে রয়েছে ভুয়ো আইএসআই মার্ক। তখন বাজেয়াপ্তর তালিকায় ছিল ইলেকট্রিক ওয়াটার হিটার, খেলনা, ব্লেন্ডার্স, বোতল এবং স্পিকার। আর এবার গিজার, খাবারের উপকরণ এবং স্পোর্টসওয়্যার বাজেয়াপ্ত করা হল। আনুমানিক ৭০ লক্ষ টাকার জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে খবর।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন