
মাঝে শুধু রাতের বিরতি। শুক্রবার সকাল থেকেই অগ্নিপথ ঘিরে আবার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে বিহার। কেন্দ্রের 'অগ্নিপথ' প্রকল্পের বিরোধিতায় জাতীয় সড়ক, রেলপথ অবরোধ করেছে বিক্ষোভকারীরা। ভাগলপুর-নয়াদিল্লি বিক্রমশিলা এক্সপ্রেস এবং জম্মু তাওয়াই-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে তাঁরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা ট্রেনের ছবি এবং ভিডিও ছবি সামনে এসেছে। তবে এখনও প্রাণহানির কোনও ঘটনা সামনে আসেনি।
এদিকে, বেশ কয়েকটি সংগঠন ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প প্রত্যাহার করার জন্য মোদী সরকারকে ৭২ ঘন্টার চূড়ান্ত সময়সীমা দিয়েছে। না হলে, আন্দোলন আরও তীব্র করার পাশাপাশি ভারত বন্ধের ডাক দেবে বলে কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তাঁরা।
জানা যাচ্ছে, আর্মি রিক্রুটমেন্ট কর্মী মোর্চার আহ্বায়ক রাজু যাদব (Raju Yadav), আগিয়াওন কেন্দ্রের বাম বিধায়ক তথা INAUS-এর সর্বভারতীয় সভাপতি মনোজ মঞ্জিল (Manoj Manjil), পালিগঞ্জের বিধায়ক সন্দীপ সৌরভ (Sandeep Saurav), ডুমরাঁর বিধায়ক অজিত কুশওয়াহা (Ajit Kushwaha), আফতাব আলম, বিকাশ যাদব সহ একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব অগ্নিপথ প্রকল্প প্রত্যাহার করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।
বিহারের প্রায় সব জেলাতেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। লখিসরাইয়ে প্ল্যাটফর্মে ভাগলপুর-নয়াদিল্লি বিক্রমশিলা এক্সপ্রেস ট্রেন আসার পরেই তাতে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
বেগুসরাইয়ে বিক্ষোভকারীরা লাখমিনিয়া রেলস্টেশনে আগুন দিয়েছে। তারা টিকিট বুকিং কাউন্টার ও ওয়েটিং এরিয়া জ্বালিয়ে দিয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের জেরে অফিসের কাগজ-জিনিসপত্র সবকিছু পড়ে ভস্ম হয়ে গেছে। এখনও দাউ দাউ করে জ্বলছে স্টেশন চত্বর।
এখানেই শেষ নয়, বিক্ষোভকারীরা ভোজপুরে বিহিয়া রেলস্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমস্তিপুরে, মহিউদ্দিননগর রেলওয়ে স্টেশনে বিক্ষোভকারীরা জম্মু তাওয়াই-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের দুটি বগিতে আগুন দিয়েছে।
খাগরিয়ায়, মানসী রেলওয়ে স্টেশনে পূর্ণিয়া-রাঁচি কোসি এক্সপ্রেস থামিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে উত্তেজিত জনতা। তাঁরা অগ্নিপথ প্রকল্পটি বাতিল করার দাবি জানিয়েছে।
এছাড়া, বেশ কিছু জায়গায় রেল লাইনে বসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে চাকরীপ্রার্থীরা। তাঁরা দাবি করেছেন, ‘কেন্দ্রের এই প্রকল্পের মাধ্যমে যদি কেউ যোগ দেয়, তাহলে এটি তাঁদের জন্য আত্মঘাতী হবে।’
রাজ কিশোর সিং, গত ৫ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনিও এদিন জানান, ‘একজন সেনা জওয়ানের কমপক্ষে এক বছরের প্রশিক্ষণ নিতে হয় এবং ৫ থেকে ৬ বছর সীমান্ত চৌকিতে জওয়ানের দায়িত্ব পালন করতে হয়। সেখানে, অগ্নিপথ প্রকল্পে মাত্র ৬ মাসের প্রশিক্ষণ এবং পাকিস্তান-চীনের সীমান্ত সহ ভারতের যে কোনও জায়গায় মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে, আংশিকভাবে দক্ষ জওয়ানরা সীমান্তে টিকে থাকতে পারবে না। এটি কেবল জওয়ানদের জন্যই নয়, পুরো ব্যবস্থার জন্য আত্মঘাতী হবে।’
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন