
মধ্যপ্রদেশ পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় ‘সলভারস গ্যাং’-এর জালিয়াতি ফাঁস। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ১২ জন। আরও অনেকে এই জালিয়াতির সাথে যুক্ত বলেই মনে করা হচ্ছে।
২০২৩ সালের মধ্যপ্রদেশ পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় বড়সড় জালিয়াতির ঘটনা সামনে এসেছে। যেখানে আধার কার্ডে ছবি ও বায়োমেট্রিক তথ্য বদলে দিয়ে ভুয়ো পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো হয়েছিল বলেই অভিযোগ।
পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে গত বছরের অক্টোবর মাসে। ওই সময় মোরেনা জেলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছিল শারীরিক পরীক্ষা। সেখানেই এক পুলিশ অফিসারের সন্দেহ হয় যে, কিছু প্রার্থীর আধার কার্ডে একাধিকবার বায়োমেট্রিক আপডেট করা হয়েছে। তারপর থেকেই তদন্তে নামে পুলিশ।
তদন্তে জানা যায়, লিখিত পরীক্ষার আগে বেশ কয়েকজন প্রার্থী তাদের আধার কার্ডে ছবি ও আঙুলের ছাপ বদলে দিয়েছিলেন। পরীক্ষার দিন প্রকৃত প্রার্থীদের বদলে ‘সলভার’ বা ভুয়ো পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দেন। পরে ফলাফল প্রকাশিত হলে, আসল প্রার্থীরা আবার তাদের আধার আপডেট করে নিজের পরিচয় ফিরিয়ে আনেন।
জানা গেছে এই চক্র কেবল লিখিত পরীক্ষায় সাহায্য করত। শারীরিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে মূল প্রার্থীদের নিজেকেই অংশ নিতে হতো। সূত্রের খবর, গোয়ালিয়র, মোরেনা, শেওপুর, শিবপুরী, শাহদোল ও আলিরাজপুর জেলার বিভিন্ন আধার কেন্দ্র এই জালিয়াতির কেন্দ্রস্থল ছিল। বিশেষ করে ভিতরওয়ার, মোরেনা ও শেওপুরের কেন্দ্রগুলোতে বায়োমেট্রিক তথ্যের কারচুপি হয়।
আরও জানা যায়, ৬ জন প্রার্থীর হয়ে একজনই লিখিত পরীক্ষায় বসেছিলেন, যার মধ্যে পাঁচজন উত্তীর্ণ হন। এই চক্র বিহারের বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়েছিল এবং প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২ জনকে এবং আরও ১০০ জনের বেশি সন্দেহভাজনের ওপর তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যেই একজন স্বীকার করেছেন, তিনি ১০০ জন পরীক্ষার্থীর আধার কার্ডের তথ্য জালিয়াতি করেছেন।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই চক্রের শিকড় বিহার ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দিল্লি পর্যন্ত বিস্তৃত, যেসব অঞ্চল অতীতেও মেডিকেল ও রেলওয়ে নিয়োগে জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৭,৪১১টি শূন্য পদের জন্য মোট ৯ লক্ষ ৬৭ হাজার ১১৮টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ৬ লক্ষ ৫২ হাজার ০৫৭ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রায় ৫৮ হাজার পরীক্ষার্থী পরের পর্যায়ের জন্য নির্বাচিত হন। । ১৮ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে শারীরিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। তারপর ৭,৪১১ জনকে নির্বাচিত করা হয়।
Keywords: Madhya Pradesh Police Recruitment, Aadhaar Card Scam, MP Police Fraud, Police Exam Cheating, MP Police Arrests, Aadhaar Forgery India, Government Job Scam
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন