
৮০ বছরের বৃদ্ধকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল চার মহিলার বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, মুম্বাইয়ে বসবাসকারী ওই বৃদ্ধের সঙ্গে ৭৩৪ বার অনলাইন লেনদেন চলেছে। পুলিশের আশঙ্কা, ওই চার জন মহিলা একজনই হতে পারে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে বৃদ্ধটি ফেসবুকে শর্ভি নামক এক মহিলাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান। যদিও প্রথমে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করা হয়নি। তবে কিছুদিন পরে শর্ভি নামের ওই মহিলা নিজেই পাল্টা রিকোয়েস্ট পাঠান। এরপরেই কথাবার্তা শুরু হয় দু'জনের মধ্যে। জানা যায়, শর্ভি বৃদ্ধকে জানিয়েছিলেন, তিনি স্বামীর থেকে আলাদা থাকেন। সন্তানদের সঙ্গে থাকেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে তিনি বৃদ্ধর থেকে টাকা নিতে শুরু করেন সন্তানদের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে।
এরপরে কবিতা নামের একটি মেয়ে বৃদ্ধকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করতে শুরু করেন। জানা গেছে, তিনি নিজেকে শর্ভির পরিচিত বলে জানিয়েছিলেন। এরপরে বৃদ্ধকে অশ্লীল মেসেজ পাঠাতে শুরু করেন এবং ব্ল্যাকমেইল করে টাকা চাইতে শুরু করেন।
সেই বছর ডিসেম্বরেই বৃদ্ধকে আর এক মহিলা মেসেজ করেন। দিনাজ নামের ওই মহিলা নিজেকে শর্ভির বোনের পরিচয় দেন। দিনাজ বৃদ্ধকে জানান, শার্ভি মারা গেছেন এবং তাঁকে হাসপাতালের বিল মেটাতে বলেন। জানা গেছে, দিনাজ শার্ভি এবং বৃদ্ধর মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট পাঠিয়ে টাকা আদায় করেন। এরপর বৃদ্ধ টাকা ফেরত চাইলে দিনাজ আত্মহত্যার হুমকি দেন।
এখানেই শেষ নয়। এরপর জেসমিন নামে এক মহিলা বৃদ্ধকে মেসেজ করতে শুরু করেন। নিজেকে দিনাজের বন্ধু বলে দাবি করে সাহায্যের জন্য আবেদন করেন। বৃদ্ধ তাকেও টাকা পাঠান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধ ৭৩৪ বার অনলাইনে মোট ৮.৭ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। এরপর নিজের সমস্ত সঞ্চয় শেষ হয়ে যাওয়ার পর ওই মহিলাদের টাকা দেওয়ার জন্য নিজের পুত্রবধূর থেকে ২ লক্ষ টাকা নেন। এখানেই শেষ নয়। এরপর ছেলের থেকেও ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন।
সাইবার জালিয়াতির শিকার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধটি। ডিমেনশিয়া ধরা পড়ে তাঁর। অবশেষে ২২ জুলাই সাইবার অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশের সন্দেহ ওই চারজন মহিলা আদতে একজনই। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন