
বন্যা হল মা গঙ্গার 'আশীর্বাদ'। উত্তরপ্রদেশে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন সে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী সঞ্জয় নিষাদ। যার উত্তরে এক বৃদ্ধা বলেন, বন্যা যদি আশীর্বাদ হয়, তাহলে মন্ত্রীর এই গ্রামে থাকা উচিত। মন্ত্রী এবং গ্রামবাসীর কথোপকথনের এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। মন্ত্রীর এহেন মন্তব্য ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই মন্তব্যকে অসংবেদনশীল বলে দাবি করেছেন অনেকে। যদিও এর প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রী জানিয়েছেন, মানসিক ভাবে সমর্থনের চেষ্টা করছিলেন।
গত কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলা। কানপুর, প্রয়াগরাজ, বারাণসীর বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। কানপুরের দেহাতের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মৎস্যমন্ত্রী। সেখানেই এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বন্যা দুর্গত এক ব্যক্তি মন্ত্রীকে বলছেন, "আমার বুক পর্যন্ত জল উঠে এসেছিল। গোটা বাড়ি ভেসে গিয়েছে"। যার উত্তরে সঞ্জয় বলেন, "আপনি তো মা গঙ্গার সন্তান। মা গঙ্গা নিজেই আপনার বাড়িতে এসেছেন, আপনাদের পা ধুইয়ে দিতে। এর ফলেই আপনি স্বর্গে চলে যাবেন"।
আরও একটি বন্যা কবলিত গ্রামে যান উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী। সেখানে গিয়ে তিনি দাবি করেন, “নিমন্ত্রণ না পেয়েও এমন অসময়ে মা গঙ্গা এসেছেন সেটা অত্যন্ত সৌভাগ্যের ব্যাপার"। মন্ত্রীর মুখে এমন কথা শুনে এক বৃদ্ধা সটান বলে বসেন, “তাহলে তো আপনারও এখানে থাকা উচিৎ। আপনি নিজেও মা গঙ্গার আশীর্বাদ নিয়ে যান"।
উল্লেখ্য, লাগাতার বৃষ্টিতে যমুনা নদীতে জলস্তর বেড়েছে, গঙ্গা নয়। কিন্তু মন্ত্রী সেটা বেমালুম ভুলে গেছেন। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন স্থানীয়রা।
অন্যদিকে, মন্ত্রীর এই বেফাঁস মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র শর্বেন্দ্র বিক্রম সিং বলেছেন, মন্ত্রীর মানসিক সমস্যা রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস প্রধান অজয় রাই এই মন্তব্যকে 'বিশ্বাসের অবমাননা' বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে মন্ত্রীর এই মন্তব্য জনসাধারণের ধর্মীয় অনুভূতিতে গভীরভাবে আঘাত করেছে।
এদিকে সমালোচনার জবাবে মুখ খুলেছেন মন্ত্রী। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে সঞ্জয় বলেছেন, "আমি জল আটকাতে পারি না। তাছাড়া এটা একদিনের বা এক বছরের সমস্যা নয়। আমি তাদের মানসিক সমর্থন দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম"। তিনি আরও বলেন, "অন্যান্য প্রচেষ্টার পাশাপাশি, ইতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং আশা জাগানো গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায়, বিরোধীরা নেতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দেবে"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন