অনলাইনে 'অ্যাসিড' অর্ডার, স্কুলে যাওয়ার পথে হামলার শিকার নাবালিকা, উঠছে একাধিক প্রশ্ন

ফ্লিপকার্ট থেকে কেনা হয় অ্যাসিড - দাবি পুলিশের। গুরুতর জখম অবস্থায় ছাত্রীটিকে সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সি সি টিভি ফুটেজ
সি সি টিভি ফুটেজ

ফের অ্যাসিড হামলার সাক্ষী রইল গোটা দেশ। দিল্লিতে ১৭ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীর উপর অ্যাসিড নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, অনলাইন মার্কেটিং সাইট ফ্লিপকার্ট থেকে রাসায়নিক অর্ডার করেছিলেন তারা। সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও অনলাইনে বা খোলা বাজারে অ্যাসিড কেনা কতটা সহজ, তা আরও একবার প্রমাণিত।

দিল্লি কমিশন ফর উইমেন ফ্লিপকার্ট এবং অ্যামাজনকে 'অ্যাসিডের সহজলভ্যতা' প্রসঙ্গে একটি নোটিশ পাঠিয়েছে। তবে, ই-কমার্স পোর্টাল এখন পর্যন্ত কোনো এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি।

এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দিল্লির মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতি মালিওয়াল। ট্যুইটে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, "এই ধরনের জঘন্য অপরাধ প্রতিরোধ করার জন্য কেন অ্যাসিড বিক্রি সীমাবদ্ধ করা হবে না? বর্তমানে অ্যাসিড কেনা 'সবজি কেনার মতোই সহজ'। এটি দুর্ভাগ্যজনক যে কমিশনের বারবার সুপারিশ সত্ত্বেও, অ্যাসিডের খুচরা বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়নি। বাজারে প্রকাশ্যে অ্যাসিড বিক্রি হচ্ছে, যা নিয়ন্ত্রণহীন। অবিলম্বে সরকারকে অ্যাসিডের খুচরো বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে হবে।"

মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির দ্বারকায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীটি গতকাল স্কুলে যাওয়ার পথে বাইকে করে দু'পাশ থেকে তাঁকে ঘিরে ধরে তিনজন। তাদের মধ্যে একজন তাঁর উপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, অ্যাসিড নিক্ষেপের পর যুবকটি ক্রমশ পিছু হটতে থাকে এবং দৌড়ে পালিয়ে যায়।

গুরুতর জখম অবস্থায় ছাত্রীটিকে সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের ডা: বি এল শেরওয়াল জানান, "ছাত্রীটির শরীরের ৮% পুড়ে গেছে। আঘাত ঠিক কতটা গভীর সেটা আগামী ৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানা যাবে। তবে, বর্তমানে তাঁর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল।"

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিন যুবকের নাম শচীন অরোরা (২০), হর্ষিত আগরওয়াল (১৯) এবং বীরেন্দ্র সিং (২২)। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার ১২ ঘণ্টা পর তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। স্কুল ছাত্রীটির উপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করতে মোটর সাইকেলে চড়ে এসেছিলেন শচীন এবং হর্ষিত।

সিনিয়র পুলিশ অফিসার সাগর প্রীত হুডার কথায়, অভিযুক্তরা ফ্লিপকার্ট থেকে অ্যাসিড অর্ডার করেছিল। শুধু তাই নয়, প্রমাণ লোপাট ও নিজেদের সপক্ষে পোক্ত অ্যালিবাই সাজাতে এবং একইসাথে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে বীরেন্দ্র সিং সচিনের মোটর সাইকেল এবং মোবাইল ফোন অন্য জায়গায় রেখে আসে। যদিও তারা পুলিশকে তাদের পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল।

হামলার খবর পাওয়া মাত্রই অভিযুক্তদের খুঁজে বের করার জন্য সিনিয়র অফিসার এম হর্ষ বর্ধনের অধীনে দ্রুত তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। এই বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে।

তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, অভিযুক্তদের লাগাতার জেরার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই বেশকিছু তথ্য সামনে এসেছে। প্রযুক্তিগত প্রমাণের ভিত্তিতে জানা গেছে, সচিন এবং স্কুলছাত্রীটি আগে থেকেই একে অপরকে চিনত। গত সেপ্টেম্বরে তাদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে বিবাদ শুরু হয়। যার জেরে মেয়েটির উপর অ্যাসিড হামলার সিদ্ধান্ত নেয় সচিন। এক্ষেত্রে তাকে সাহায্য করেছে বাকি দু'জন অভিযুক্ত।

সি সি টিভি ফুটেজ
মমতা ব্যানার্জির সফরের মাঝেই বিজেপিতে যোগ মেঘালয়ের তৃণমূল বিধায়কের
সি সি টিভি ফুটেজ
ভারত-চিন সংঘর্ষ ইস্যুতে উত্তাল সংসদ, সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে ওয়াকআউট বিরোধীদের

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in