

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সাইমা ওয়াজেদকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। সংস্থাটির দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অফিসের প্রধান ছিলেন সায়মা। অফিস ছিল নয়াদিল্লিতে। অন্যদিকে হু-র এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
তবে কী কারণে এই পদক্ষেপ, সে সম্পর্কে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে স্পস্তভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে জানা যাচ্ছে, দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার-সহ একাধিক অভিযোগে সায়মার বিরুদ্ধে দু’টি মামলা করেছিল বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (ACC)। মামলা দায়েরের চার মাস পর হু এই পদক্ষেপ করল। শুক্রবার থেকে তাঁর অনির্দিষ্টকালের ছুটি কার্যকর হয়েছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় কাজ শুরু করেন সায়মা। প্রথম থেকেই তাঁর নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ছিল। অভিযোগ ওঠে, হু-র ওই পদে বসার জন্য তিনি তাঁর মা তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব কাজে লাগিয়েছিলেন। এছাড়া হাসিনা-কন্যার বিরুদ্ধে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বাংলাদেশে এনিয়ে প্রতারণা, জালিয়াতি, নথি জালের অভিযোগে মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এদিকে সাইমার স্থলাভিষিক্ত হবেন হু-র সহকারী মহাপরিচালক ক্যাথারিনা বোহেম। জানা গেছে, ১৫ জুলাই মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে WHO SEARO অফিসে পৌঁছাবেন। ক্যাথারিনা বোহেম ২০২৩ সাল থেকে হু-এর সহকারী মহাপরিচালক হিসেবে কাজ করছেন।
অন্যদিকে, হু-এর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এ দেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের জারি করা এক বিবৃতি অনুসারে, "জালিয়াতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগের তদন্তের মধ্যে সায়মা ওয়াজেদকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে রাখার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই"।
আলম আরও জানিয়েছেন, "আমরা এটিকে জবাবদিহিতার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি। বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এটার একটা স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। যা ওয়াজেদকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করবে, সংশ্লিষ্ট সকল সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করবে এবং এই মর্যাদাপূর্ণ ভূমিকার অখণ্ডতা এবং সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘ ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করবে"।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ নেওয়ার পর ভারতে আশ্রয় নেন। চলতি জুলাইতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT) আদালত একটি অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন