
জার্মানির নির্বাচনে মধ্য-ডানপন্থী দল ‘ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন’ (CDU) জয়লাভ করেছে। তাদের প্রাপ্ত ভোট ২৮.৫০ শতাংশ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল – জার্মানিতে এই প্রথম বিপুল নির্বাচনী সাফল্য পেল অতি- দক্ষিণপন্থীরা। ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’ (AFD) ২০.৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।
বিপুল পরিমাণ ভোট কমেছে চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের মধ্য-বামপন্থী দল ‘সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’র (SDP)। তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে তারা। প্রায় নয় শতাংশ ভোট কমে এসডিপি পেয়েছে ১৬.৪০ শতাংশ ভোট। নতুন চ্যান্সেলর হতে চলেছেন সিডিইউ-র রক্ষণশীল নেতা ফ্রেডরিক মের্জ।
পাশাপাশি, সবাইকে অবাক করে ভালো ফল করেছে অতিবাম দল ‘দ্য লেফ্ট’ (Die Linke)। মূলত পূর্ব জার্মানিতেই এই বাম দলের শক্ত ঘাঁটি। তৎকালীন পূর্ব জার্মানির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির উত্তরসূরি এই দল। প্রায় ৯ শতাংশ ভোট পেয়ে ‘বুন্দেস্ট্যাগ’ (জার্মানির পার্লামেন্ট)-এ ৬৪ জন এমপি নিশ্চিত করেছে তারা।
কমবয়সীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই দল। এবারের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ তরুণ ভোটার ‘দ্য লেফ্ট’কে ভোট দিয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন –মূলত উগ্র-দক্ষিণপন্থীদের বিরুদ্ধে কট্টর অবস্থান, বিত্তশালীদের উপর অতিরিক্ত কর চাপানোর দাবি, আবাসনের ভাড়া কমানো এবং গণপরিবহনের খরচ কমানো সহ একাধিক দাবির জন্য কমবয়সীদের কাছে এই বাম দল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে, মধ্য-ডানপন্থী দল সিডিইউ সবচেয়ে বেশি ভোট পেলেও, তাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। বুন্দেস্ট্যাগের ৬৩০টি আসনের মধ্যে তারা ২০৮টি আসন জিততে চলেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য সর্বনিম্ন ৩১৬টি আসন প্রয়োজন। সুতরাং সরকার গঠনের জন্য অন্য দলের সাথে জোট করতে হবে। সেক্ষেত্রে তাদের সম্ভাব্য জোটসঙ্গী হতে পারে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অথবা গ্রীন পার্টি। এই পরিস্থিতিতে সিডিইউ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে তারা এএফডি-র সঙ্গে সরকার গড়বে না। ফলে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হয়েও সরকার থেকে দূরেই থাকতে হবে অতি দক্ষিণপন্থীদের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জার্মানির নির্বাচন ব্যবস্থা জটিল। প্রতিটি ভোটার দুটি করে ভোট দেন। একটি নির্বাচনী এলাকার প্রার্থীর জন্য এবং অন্যটি একটি রাজনৈতিক দলের জন্য। বুন্দেস্ট্যাগের ৬৩০টি আসন প্রতিটি দলের প্রাপ্ত দ্বিতীয় ভোটের অনুপাতের উপর ভিত্তি করে বরাদ্দ করা হয়। তবে ন্যূনতম ৫ শতাংশ ভোট পেতে হয়। তবেই বুন্দেস্ট্যাগে (জার্মানির পার্লামেন্ট) আসন নিশ্চিত হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন