
২০ শতাংশ থেকে ২৪৫% শতাংশ। চিন থেকে আমদানিকৃত বিভিন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে এই হারেই শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। দুই মহান শক্তিধর দেশের শুল্ক যুদ্ধে মঙ্গলবার রাতেই আরও একদফা শুল্কের হার বাড়িয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। পারস্পরিক শুল্ক চাপানোর এই যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ নেই। দুই দেশের মধ্যে চলা এই লড়াইতে চিনের অনমনীয় মনোভাবকেই দোষী করছে আমেরিকা।
চিন এবং আমেরিকার মধ্যে শুল্ক যুদ্ধের মাঝেই বুধবার চিন জানিয়েছে, তারা কোনোভাবেই এতে ভীত নয়। আমাদের হুমকি দিয়ে অথবা ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করে লাভ হবেনা। বরং পারস্পরিক স্বার্থে দুই দেশেরই দুই দেশকে সমভাবে সম্মান জানানো উচিত।
চিনের বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র লিন জিয়ানকে উদ্ধৃত করে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, চিন বারবার শুল্ক ইস্যুতে তার দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেছে। শুল্ক যুদ্ধ শুরু করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চিন তার বৈধ অধিকার ও স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যা সম্পূর্ণ যুক্তিসঙ্গত এবং আইনসঙ্গত। শুল্ক এবং বাণিজ্য যুদ্ধে কোনও বিজয়ী হয় না। চীন এই যুদ্ধগুলিতে লড়তে চায় না তবে সেগুলি থেকে ভীতও নয়।
গতকাল রাতের ঘোষণার পর দেখা যাচ্ছে চিন থেকে আমদানিকৃত বিভিন্ন পণ্যের ওপর বিভিন্ন হারে শুল্ক চাপানো হয়েছে। যেমন, সিরিঞ্জ ও ছুঁচে ২৪৫%, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি – ১৭৩%, সি ফুড – ১৭০%, উলের সোয়েটার – ১৬৯%, প্লাস্টিক ডিশ – ১৫৯%, টোস্টার – ১৫০%, ইলেক্ট্রিক গাড়ি – ১৪৮%, পুতুল, খেলনা ইত্যাদিতে – ১৪৫%, ভিটামিন সি – ১৪৫%, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল – ৭৫%, গাড়ির চাকা – ৭৩%, সেমিকন্ডাক্টর – ৭০%, ধাতব আসবাব – ৭০%, গাড়ির দরকার কব্জা – ৬৭%, ল্যাপটপ – ২০%। যদিও শিশুদের বইয়ের ওপর কোনও শুল্ক চাপায়নি আমেরিকা।
দ্বিতীয় দফায় আমেরিকার পদে বসার পর থেকেই একাধিক বিতর্কিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট ট্রেড পলিসি’ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। খোদ আমেরিকার বুকেই ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের একাধিক সিদ্ধান্তের মধ্যে বিশ্বকে সবথেকে বেশি প্রভাবিত করেছে শুল্ক নীতি। যেভাবে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছেন তাতে ক্ষতির মুখে পড়েছে বিশ্ব বাণিজ্য। একইভাবে এই শুল্ক নীতির জেরেই ধস নেমেছে বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ার বাজারে। এশিয়া, আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন শেয়ার বাজারে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। একাধিক দেশ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চাইলেও চিনের অনমনীয় অবস্থানের কারণে দুই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন