
পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি মামলায় (PNB Scam) বেলজিয়াম থেকে গ্রেফতার হলেন পলাতক হীরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি। তাঁকে গ্রেফতার করেছে বেলজিয়াম পুলিশ। ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি-র অনুরোধে, মুম্বাইয়ের একটি আদালতের জারি করা জামিন অযোগ্য পরোয়ানার ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৩ মে-র পর, ২০২১ সালের ১৫ জুন চোক্সীর বিরুদ্ধে ফের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ওই আদালত।
২০১৮ সাল থেকে পলাতক ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি। ১২ এপ্রিল বেলজিয়ামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে আটক করা হয়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের চেষ্টার কয়েকদিনের মধ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, চোকসি বর্তমানে বেলজিয়ামের একটি ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছেন। ‘এফ রেসিডেন্সি কার্ড’ জোগাড় করে ২০২৩ সাল থেকে তিনি ওই দেশে রয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে বলেও খবর মিলেছে।
চোকসির পরিকল্পনা ছিল চিকিৎসার জন্য সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার, তবে তার আগেই বেলজিয়াম পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। জানা গেছে, ইডি ও সিবিআই ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে বেলজিয়ামের কাছে চোকসিকে ফেরানোর আবেদন জানায়। যদিও চোকসির আইনজীবীরা তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি ভ্রমণে সক্ষম নন বলে জানান। পাল্টা ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মেহুল যদি অ্যান্টিগুয়া থেকে বেলজিয়াম যেতে পারেন তাহলে বেলজিয়াম থেকে ভারতেও আসতে পারবেন।
চোকসির বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিশ প্রত্যাহার করা হলেও, ভারতীয় সংস্থাগুলি নতুন আবেদনের কারণে তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হয়। আর তাতেই সাফল্য আসে।
গ্রেফতার হলেও এখনই যে ভারতে ফিরবেন তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। ভারতের তরফ থেকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তাঁকে ফেরানোর জন্য। চোকসির পক্ষ থেকে শীঘ্রই জামিনের আবেদন করা হতে পারে।
প্রসঙ্গত, মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে পিএনবি-র ১৩ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে চোকসির বিরুদ্ধে। তবে তদন্তকারী সংস্থাগুলি চোকসির বিরুদ্ধে যে মামলাটি করছে তা মূলত ৬,০৯৫ কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার উপরে ভিত্তি করে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে পিএনবি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর পরই ভারত ছেড়ে পালিয়ে যান চোক্সী। অ্যান্টিগা ও বারবুডার নাগরিকত্বও জোগাড় করে সেখানে থাকতে শুরু করেন। এরপর ২০২১ সালে সেখান থেকেও রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়ে যান তিনি। পরে তাঁকে ডমিনিকায় পাওয়া যায়। এর পর বেলজিয়ান স্ত্রীর সাহায্যে ২০২৩ সাল থেকে বেলজিয়ামে থাকা শুরু করেন।
মেহুল চোকসির ভাগ্নে নীরব মোদীও পিএনবি-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত। তিনি এই মুহূর্তে ব্রিটেনে রয়েছেন। তাঁকে ভারতে ফেরানোর জন্য ব্রিটেন সরকারের সঙ্গে আইনি কথাবার্তা চলছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন