মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ দিন আগেই ভেঙে দেওয়া হল পাক সংসদ। এবার আগামী ৯০ দিনের মধ্যে দেশে সাধারণ নির্বাচনের জন্য তৈরি হবে পাকিস্তান। কিন্তু তোশাখানা মামলা-সহ একাধিক দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে হাজতবাস এবং ৫ বছরের জন্য দেশের রাজনীতি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাই এবার তাকে ছাড়াই নির্বাচন হতে চলেছে সে দেশে। তবে তার আগে বৃহস্পতিবার বিরোধী দলনেতা রাজা রিয়াজের সঙ্গে বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করবেন বলে জানিয়েছেন সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।
২০২২ সালের এপ্রিল মাসে পাক সংসদে অনাস্থা ভোটে হারের পরই প্রধানমন্ত্রীত্ব খোয়াতে হয় প্রাক্তন পাক ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ইমরান খানকে। তারপরেই প্রধানমন্ত্রী হন পাঞ্জাবের দীর্ঘদিনের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। মঙ্গলবারই সংসদে বিদায়ী ভাষণে তিনি জানিয়েছিলেন যে, দেশের রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভিকে মেয়াদ পূরণের তিনদিন আগেই সংসদ ভেঙে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি। সেই অনুযায়ী, বুধবার মাঝরাতেই পাক সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদকে ভেঙে দেওয়ার আদেশ দেন রাষ্ট্রপতি আলভি। বিদায়ী ভাষণে শাহবাজ আরও জানান, “পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ ভাঙার পর আগামী নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করার জন্য আমাদের হাতে মাত্র তিনদিন সময় রয়েছে। বৃহস্পতিবারই এই নিয়ে বিরোধী দলনেতা রাজা রিয়াজের সঙ্গে বৈঠকে বসবো আমি।”
অন্যদিকে, পাকিস্তানের এই অরাজকতার পরিস্থিতিতে কতদিনের মধ্যে ভোট করানো যাবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। পাক সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের সাংবিধানিক মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সংসদ কক্ষ ভাঙা হলে, সেক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে দেশে সাধারণ নির্বাচন করানোর জন্য সময় থাকে ৬০ দিন। কিন্তু মেয়াদ শেষের আগেই যদি সংসদ কক্ষ ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পর নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য ৯০ দিন সময় পাওয়া যায়।
এবারে শাহবাজ সরকার তাঁদের মেয়াদ পূরণের ৩ দিন আগেই সংসদ ভেঙে দেওয়ায় চলতি বছরের নভেম্বর মাসে সে দেশে নির্বাচন হতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও অন্য একাংশের মতে, দেশে সাধারণ নির্বাচনের সময় আরও পিছিয়ে যেতে পারে। কারণ গত মে মাসেই সর্বশেষ সেনসাস ডেটা প্রকাশিত হয়েছে। তাই দেশের নির্বাচনী কেন্দ্রগুলির পুনর্বিন্যাস করতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের স্বাভাবিকভাবেই বেশ কিছুটা সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে ভোট হতে হতে আগামী বছরের মার্চ মাস হয়ে যেতে পারে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন