
ইরান-ইজরায়েলের মিসাইল সংঘর্ষে প্রাণ হারাচ্ছেন দুই দেশের সাধারণ নাগরিক। ওয়াশিংটন ভিত্তিক এক মানবাধিকার সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, লাগাতার হামলার জেরে এখনও পর্যন্ত ইরানে মৃত্যু হয়েছে ৫৮৫ জনের। আহত ১,৩২৬ জন। বুধবার ভোরেও ইরানের উপর হামলা চালায় ইজরায়েল। পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরানও। অন্যদিকে, দুই দেশের এই সংঘাতের জেরে তেহরান থেকে পালাচ্ছেন সেখানকার নাগরিকেরা।
গত শুক্রবার ইরানে প্রথম হামলা চালায় ইজরায়েল। তাদের দাবি, পরমাণু বোমা তৈরির দোড়গোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল ইরান। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থেই তাদের এই হামলা। ইরান সাধারণত মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আনে না। কিন্তু সোমবার মার্কিন মানবাধিকার কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়ছিল, ২২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ইজরায়েলের হামলায়। আহত ছিলেন ১,২৭৭ জন। এরপর বুধবার হামলার ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
বুধবার ষষ্ঠ দিনে পড়েছে ইরান-ইজরায়েল সংঘাত। আমেরিকার মানবাধিকার সংগঠনের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ইজরায়েলের হামলায় ইরানে মৃত্যু হয়েছে ৫৮৫ জনের। পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১,৩২৬ জন। এদের মধ্যে ২৩৯ জন সাধারণ নাগরিক ও ১২৬ জন নিরাপত্তাবাহিনীর জওয়ান। পাল্টা ব্যালেস্টিক মিসাইলের পাশাপাশি এবার সুপারসনিক মিসাইল ছুড়েছে ইরান।
জানা যাচ্ছে, ইজরায়েলের রাজধানী তেল আভিভকে নিশানা করেছে ইরান। তবে এখনও পর্যন্ত সেই হামলার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সামনে আসেনি। এদিকে দুই দেশের সংঘাতের জেরে তেহরান থেকে পালাতে শুরু করেছে স্থানীয় ও বিদেশিরা। বুধবার ভোরে তেহরানে নতুন করে বোমা হামলার খবর পাওয়া গিয়েছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানবাসীদের এলাকা ছাড়ার বার্তা দেন। তারপরেই মনে করা হচ্ছিল ওই শহরে বড়সড় হামলা হতে পারে। এই হামলার পর তেহরানের দোকনপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পেট্রোল পাম্পগুলিতে দেখা গিয়েছে গাড়ির ভিড়।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ করার দাবি জানিয়েছেন। একটি পোস্টে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইনের নাম উল্লেখ না করে ট্রাম্প লেখেন, ‘‘আমরা জানি ‘সর্বোচ্চ নেতা’ ঠিক কোথায় লুকিয়ে রয়েছেন! সেখানে তিনি নিরাপদে রয়েছেন। আমরা তাঁকে খুঁজে বার করব না বা হত্যা করব না! অন্তত এখন নয়"।
যদিও ইরানের রাষ্ট্রপতি পোস্টের কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও সে দেশের সেনাবাহিনীর প্রধান কমান্ডার জেনারেল আব্দুল রহিম মুসাভি বলেছেন, "এখনও পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানগুলি কেবল সতর্কতা এবং প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। শাস্তি অভিযান শীঘ্রই পরিচালিত হবে!"
অন্যদিকে, ইরান ইজরায়েলে প্রায় ৪০০ টি মিসাইল এবং ১০০-এরও বেশি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। যার জেরে এখনও পর্যন্ত সে দেশে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
হোয়াইট হাউসের এক কমকর্তার মতে, মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে আলোচনা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন