* মায়ানমারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
* এখনও পর্যন্ত মৃত ১৬৪৪, আহত ৩,৪০৮ এবং নিখোঁজ ১৩৯।
* ইউএসজিএস-এর আশঙ্কা মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত ও আহতের সংখ্যা। শনিবার সকালেও যে সংখ্যা ছিল ১৫০, তা একসময় ৬৯৪ হয়ে ১০০০ পেরিয়ে এখন ১,৬০০। আহতের সংখ্যা ৩,৪০৮। মায়ানমার এবং থাইল্যান্ড মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১,৬৪৪। সরকারি হিসেবে এখনও নিখোঁজ ১৩৯ জন। গতকালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে মায়ানমারের বিস্তীর্ণ অংশ। সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মায়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়। ইউ এস জিওলজিক্যাল সার্ভের অনুমান, মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে।
শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় মায়ানমারে কমপক্ষে ১৩ বার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে মায়ানমারে প্রথম ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটর স্কেলে যে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.৭ ম্যাগনিটিউড। এর পরেই ৬.৭ ম্যাগনিটিউড তীব্রতার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
মায়ানমারের শুক্রবারের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর শনিবার সকালেই সেখানে পৌঁছায় চিনের ৩৭ জনের এক উদ্ধারকারী দল ও মেডিকেল টিম। একথা জানিয়েছে মায়ানমারের সরকারি সংবাদমাধ্যম। এর পরেই ভারতের পক্ষ থেকে ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী এবং ১১৮ জনের মেডিকেল টিম ও উদ্ধারকারী টিম পাঠানো হয়। ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেফট্যানেন্ট কর্নেল জগনীত গিল।
শনিবার রাতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এক এক্স বার্তায় জানানো হয়েছে একটি সি১৩০ বিমানে করে ৮০ জন এনডিআরএফ সদস্য মায়ানমার পৌঁছেছে। এছাড়াও ৪০ টন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে একটি দল ইয়াঙ্গন বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।
২০২১ সাল থেকে গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত মায়ানমার। বর্তমানে সেখানকার শাসনক্ষমতা জুন্টার দখলে। এশিয়ার অন্যতম গরিব দেশ হিসেবে পরিচিত মায়ানমার কীভাবে এই ক্ষয়ক্ষতির সামাল দেবে তা নিয়েই এখন ভাবনা চিন্তা করছে সে দেশের প্রশাসন। ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।
ইউএসএ জিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য অনুসারে, বিগত ১০০ বছরের মধ্যে এটাই মায়ানমারের সর্বাধিক ভয়াবহ ভূমিকম্প। এর আগে ১৯১২ সালে মায়ানমারের তাউনগিতে (Taunggyi) এই ধরণের ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল।
কেন ভূমিকম্প?
পৃথিবীর উপরের স্তরটি বিভিন্ন অংশে বিভক্ত, যাদেরকে টেকটোনিক প্লেট বলা হয়। এই প্লেটগুলি ক্রমাগত নড়াচড়া করে। কিছু একে অপরের পাশাপাশি চলে, আবার কিছু একে অপরের উপরে এবং নীচে থাকে। এই নড়াচড়ার কারণেই ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়।
মায়ানমারকে বিশ্বের সবচেয়ে ভূতাত্ত্বিকভাবে “সক্রিয়” অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কারণ ইউরেশিয়ান প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট, সুন্দা প্লেট এবং বার্মা মাইক্রোপ্লেট - এই চারটি টেকটোনিক প্লেটের ওপরে এটি অবস্থিত।
ইউরেশিয়ান প্লেটের সাথে ভারতীয় প্লেটের সংঘর্ষের ফলে হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টি হয়েছিল। ২০০৪ সালে ভারতীয় প্লেট বার্মা মাইক্রোপ্লেটের নীচে সরে যাওয়ার কারণে সুনামি হয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন