
প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় ‘তার্কিশ-প্যালেস্টাইন ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’ গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইজরায়েলি বাহিনী। এটি ছিল গাজার একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতাল। প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা হত এই হাসপাতালে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে তুরস্ক এই হাসপাতাল নির্মানের জন্য প্রায় ৩৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছিল। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ইজরায়েলি বিমান হামলায় এটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবার এটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিল ইজরায়েল।
হাসপাতালটি নেটজারিম করিডোরে অবস্থিত ছিল, যা গাজা উপত্যকার একেবারে মাঝ বরাবর। গত ১৭ মাসব্যাপী চলা যুদ্ধের বেশিরভাগ সময় এটি ইজরায়েলি সেনাদের দখলে ছিল। হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ হওয়ার পরপরই ইজরায়েল এই সপ্তাহে করিডোরটি পুনরায় দখল করতে উদ্যত হয়েছে।
আইডিএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে - শুক্রবার তাদের বাহিনী গাজা উপত্যকার আরও গভীরে অগ্রসর হয়েছে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতালটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ শুক্রবার বলেছেন - তাঁর দেশ গাজায় ততক্ষণ অভিযান চালাবে, যতক্ষণ না হামাস ৫৯ জন পণবন্দিকে মুক্ত করছে। জানা যাচ্ছে এঁদের মধ্যে ২৪ জন এখনও জীবিত।
কাটজের হুঁশিয়ারি, হামাস ইজরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি না দিলে আশপাশের এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে সেই এলাকা অধিগ্রহণ করা হবে। তাঁর কথায় – “হামাস বন্দিদের মুক্তি দিতে যত দেরি করবে, তত দ্রুত গাজায় তারা জমি হারাবে।’’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে - ‘তার্কিশ-প্যালেস্টাইন ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’-এ যুদ্ধের সময় থেকেই কোনও ডাক্তার কিংবা রোগী ছিল না। ওখানে হামাস ঘাঁটি গেঁড়েছিল।
অন্যদিকে, এই হাসপাতাল নির্মানে সহয়তাকারী তুরস্ক বিবৃতি দিয়ে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে – এটি প্যালেস্টেনিয়ানদের বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার জন্য ইজরায়েলের ইচ্ছাকৃত হামলা। যুদ্ধের সময় ইজরায়েলি সেনারা এক পর্যায়ে এটিকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছিল।
হাসপাতালের অঙ্কলোজি বিভাগের প্রধান ডাঃ জাকি আল-জাকজুক বলেন – “যুদ্ধবিরতির সময় আমাদের একটি মেডিকেল দল এই হাসপাতাল পরিদর্শন করে এসেছে। সেখানে কিছু কিছু জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বেশিরভাগ ব্যবস্থাই ঠিক ছিল। আমি বুঝতে পারছি না একটি হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়ে কী লাভ হতে পারে!”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন