
গাড়ি পার্ক করা নিয়ে সামান্য কথাকাটি। তার জেরে মারধর এবং হেনস্থার স্বীকার হলেন এক ভারতীয় যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায়। অভিযোগ, ওই যুবককে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করেছেন স্থানীয় একদল যুবক। আক্রান্তের অভিযোগ, ভারতীয় বলেই বর্ণবিদ্বেষের জেরে এহেন হেনস্থা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাকিদের খোঁজ চলছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে। দ্য অস্ট্রেলিয়া টুডে-র প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আক্রান্ত ওই যুবকের নাম চরণপ্রীত সিং। পড়াশোনার সূত্রে বিদেশে রয়েছেন তিনি। গত সপ্তাহে কিন্টোর অ্যাভেনিউয়ে একটি জায়গায় গিয়েছিলেন চরণজিৎ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। অভিযোগ, গাড়ি রাখার সময় বিনা প্ররোচনায় একদল স্থানীয় যুবক তাঁকে কুৎসিত ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এমনকি 'ভারতীয়' বলেও অপমান করা হয়।
অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় দল বেঁধে তাঁকে লাথি-ঘুষি মারতে শুরু করেন ওই যুবকেরা। মারের ফলে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন ওই যুবক। আক্রান্তকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপরেই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। বর্তমানে তিনি অ্যাডিলেডের হাসপাতালেই চিকিৎসাধীনে রয়েছেন। শরীরের নানা জায়গায় ক্ষত হয়েছে। এমনকি ধারালো কিছু দিয়েও আঘাত করা হয়েছে তাঁকে। মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে।
ওই যুবক অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘যখন এই রকমের ঘটনা ঘটে, তখন তাঁকে মনে করানো হয় যে সে অচ্ছুত। তার নিজের দেশে ফিরে যাওয়া উচিত।"
চোখে জল নিয়ে যুবকের প্রশ্ন, "আপনি শরীরের অনেক কিছু বদলে ফেলতে পারেন। কিন্তু চামড়ার রং বদলাবেন কেমন করে?’’
অস্ট্রেলিয়া পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয়েছে তদন্ত। ইতিমধ্যেই এক ২০ বছরের যুবককে চিহ্নিত করে এনফিল্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। সিসিটিভি দেখে অপরাধীদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতীয় যুবকের সঙ্গে এহেন আচরণে শোরগোল পড়েছে ভারতীয়দের মনে। এই ঘটনার কড়া নিন্দা জানিয়েছে অ্যাডিলেডে ভারতীয়দের একটি সংগঠন। প্রশাসনের কাছে তাদের আবেদন, বর্ণ বিদ্বেষমূলক কোনও কিছুর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পাশাপাশি, পড়াশোনার সূত্রে যারা বিদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছেন, তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করুক প্রশাসন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন