
রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে ডোনাল্ড ট্রাম্প আইনের শাসন অগ্রাহ্য করছেন। বৃহস্পতিবার সিয়াটেলের এক বিচারক একথা বলেছেন। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্বকে খর্ব করার এক নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করেছেন। যে নির্দেশিকাকে বিচারক অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছেন। ইতিমধ্যেই এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ জমা দেওয়া হয়েছে।
গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই এই আদেশে স্বাক্ষর করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদেশ অনুসারে বিভিন্ন মার্কিন সংস্থাকে ১৯ ফেব্রুয়ারির পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী সেইসব শিশুদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যাদের মা অথবা বাবা মার্কিন নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা নন।
সিয়াটেলের ফেডারেল বিচারকের আগে বুধবার মেরিল্যান্ডের এক ফেডারেল বিচারক একই ধরণের আদেশ দিয়েছেন এবং ওই নির্দেশিকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন রাজ্য এবং অভিবাসী সমর্থকদের অনুরোধে বোস্টন এবং নিউ হ্যাম্পশায়ারের বিচারকরা শুক্র ও সোমবার একই ধরণের নির্দেশ দিতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন ওয়াশিংটন, অ্যারিজোনা, ইলিনয় এবং ওরেগনে বেশ কয়েকজন গর্ভবতী মহিলা এই বিষয়ে মামলা দায়ের করেছেন। তাঁদের বক্তব্য অনুসারে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই আদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত অধিকার লঙ্ঘিত করে। ওই সংশোধনী অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যে কেউ সেই দেশের নাগরিক বলে গণ্য হবে।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার রোধের লক্ষ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের নির্বাহী আদেশে অগ্রসর হতে বাধা প্রদানকারী দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা জারির সময় মার্কিন জেলা বিচারক জন সি. কফেনোর তাঁর মতামত জানান।
দুই সপ্তাহ আগে চার ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন রাজ্যের আনা মামলার শুনানির সময় কফেনোর এই আদেশকে “স্পষ্টতই অসাংবিধানিক” বলে খারিজ করেছিলেন। বৃহস্পতিবারের আদালতের অধিবেশনে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগন কর্তৃক নিযুক্ত কফেনোর বিচার বিভাগের আইনজীবীরা আদেশটিকে সাংবিধানিক বলে যুক্তি দেওয়ার পরেই তিনি সরাসরি কঠোর ভাষায় ট্রাম্পের সমালোচনা করেন।
ট্রাম্পের এই আদেশের ফলে আমেরিকায় অস্থায়ীভাবে কর্মরত, ছাত্র এবং পর্যটন ভিসায় থাকা অবৈধ অভিবাসী এবং বিদেশীদের সন্তানদের জন্মগত নাগরিকত্বের অধিকার অস্বীকার করা হবে। এই জনসংখ্যা প্রতি বছর ১৫০,০০০ এরও বেশি বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই আদেশের বিরুদ্ধে মোট ২২টি রাজ্য এবং ৬টির বেশি নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী কমপক্ষে ছয়টি মামলা দায়ের করছে। তাদের যুক্তি ট্রাম্পের এই প্রচেষ্টায় সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর নাগরিকত্ব ধারা লঙ্ঘন করে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন