ময়মনসিংহের ওই ভাঙা বাড়ির সঙ্গে সত্যজিতের কোনও সম্পর্ক নেই! বিতর্কের মাঝে আর কী জানাল ঢাকা?

People's Reporter: বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাড়িটি তৈরি করেছিলেন স্থানীয় জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী। স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা এবং বিদগ্ধ মানুষজনও বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের নয় বলেই দাবি করেছেন।
ময়মনসিংহের ওই ভাঙা বাড়ির সঙ্গে সত্যজিতের কোনও সম্পর্ক নেই! বিতর্কের মাঝে আর কী জানাল ঢাকা?
গ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভেঙে ফেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকারকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছে নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ওই বাড়িটির সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই বাড়িটি বর্তমানে সরকারের মালিকানাধীন। এমনকি বাড়িটির ইতিহাসও তুলে ধরেছে বাংলাদেশ সরকার। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক খবর না ছড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে একটি সুদীর্ঘ বিবৃতি দেওয়া হয়। বিবৃতিতে জানানো হয়, সবিস্তারে তদন্ত করে দেখার পরে জানা গেছে, বাড়িটির সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের কোনও সম্পর্ক নেই। বাড়িটি তৈরি করেছিলেন স্থানীয় জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী। তিনি তাঁর কর্মচারীদের জন্য নির্মাণ করেছিলেন। জমিদার প্রথা অবলুপ্ত হওয়ার পর বাড়িটি সরকারের হাতে চলে আসে। পরে বাংলাদেশ সরকার বাড়িটি 'শিশু অ্যাকাডেমি'-কে ব্যবহারের অনুমতি দেয়। তখন থেকে বাড়িটি জেলা শিশু অ্যাকাডেমির অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা এবং বিদগ্ধ মানুষজনও বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের নয় বলেই দাবি করেছেন।

তবে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাড়িটির সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের সম্পর্ক না থাকলেও, ওই এলাকার সঙ্গে তাঁর ক্ষীণ সংযোগ রয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের প্রপিতামহ হরিকিশোর রায়, যিনি সত্যজিতের দাদু তথা প্রখ্যাত সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীকে দত্তক নিয়েছিলেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই জায়গায় বহু বছর আগে সেই রায় পরিবারের একটি বাড়ি ছিল। বাড়িটির সামনের রাস্তার নামকরণ হয়েছে হরিকিশোরের নামে। তবে বহু বছর আগেই বাড়িটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। বর্তমানে পুরানো বাড়ি ভেঙে বহুতল ভবন হয়েছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২০১৪ সালের পর শিশু অ্যাকাডেমি তাদের দফতর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে ওই বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। ফলে সেখানে অনেক অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে ওই বাড়িটি ভেঙে একটি ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমির অনুমতি নিয়ে জেলা প্রশাসন সেই কাজ শুরু করেছে। গত ৭ মার্চ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাড়ি ভাঙার কথা জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক একটি সভা আহ্বান করেন। যেখানে প্রবীণ নাগরিক, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, ভাঙার কাজ চলা বাড়িটির সঙ্গে সত্যজিৎ বা তাঁর পূর্বপুরুষদের কোনও সম্পর্ক নেই।

ময়মনসিংহের ওই ভাঙা বাড়ির সঙ্গে সত্যজিতের কোনও সম্পর্ক নেই! বিতর্কের মাঝে আর কী জানাল ঢাকা?
ময়মনসিংহে ভাঙা হচ্ছে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি! মমতার উদ্বেগ প্রকাশের পরেই বাংলাদেশকে বার্তা দিল্লির

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in