
পাকিস্তানের বালুচিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাক করল বালোচ লিবারেশন আর্মি (BLA)। জানা যাচ্ছে গোটা ট্রেন লাইনে বিস্ফোরক ছড়িয়ে রেখেছে তারা। শতাধিক যাত্রীকে পণবন্দি করে রেখেছে সংগঠনটি।
পাকিস্তানের রেলওয়ে কর্মকর্তারা এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থায় জানিয়েছেন, কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি বালুচিস্তানের বোলান জেলার মুশকাফ এলাকা থেকে হাইজ্যাক করা হয়েছে। ট্রেনটির ৯টি বগিতে ৪০০ জনেরও বেশি যাত্রী রয়েছে। ট্রেনটি থামানোর জন্য আগেই বিস্ফোরণের মাধ্যমে রেললাইন উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর ট্রেন থামলে বিএলএ সদস্যরা ট্রেনে উঠে পড়ে।
ঘটনার দায় স্বীকার করে বিএলএ-এর মুখপাত্র জিয়ান্দ বালুচ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "যদি পাকিস্তানি বাহিনী কোনও সামরিক অভিযান শুরু করে, তবে যাত্রীদের হত্যা করা হবে। যেকোনো সামরিক অনুপ্রবেশেরও সমানভাবে জবাব দেওয়া হবে।"
তিনি আরও জানান, "এখনও পর্যন্ত ৬ জন পাক সেনা নিহত হয়েছে এবং শত শত যাত্রী বিএলএ হেফাজতে রয়েছে। বালোচ লিবারেশন আর্মি এই অভিযানের সম্পূর্ণ দায় স্বীকার করছে।"
বালুচিস্তানের সরকার জরুরি অবস্থা জারি করেছে। পুলিশ প্রশাসনকেও তৎপর রেখেছে। বালুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শহীদ রিন্দ বলেন, "নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।"
উল্লেখ্য, বালুচিস্তানে কয়েক দশক ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহ চলছে। বিদ্রোহীদের অভিযোগ, পাকিস্তান সরকার বালুচিস্তানের খনিজ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ শোষণ করছে কিন্তু এতে স্থানীয় জনগণের কোনও উন্নতি হচ্ছে না।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে বিএলএ অন্যতম শক্তিশালী, যারা কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
বালুচিস্তান আয়তনের দিক থেকে পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ, যা দেশের মোট ভূমির প্রায় ৪৪ শতাংশ জুড়ে রয়েছে। এই অঞ্চলে গোয়াদরে বিশ্বের অন্যতম গভীর সমুদ্র বন্দর অবস্থিত, যা চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (সিপিইসি)-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
গত বছর নভেম্বর মাসেই বালুচিস্তানের কোয়েটার স্টেশনে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছিল বালোচ লিবারেশন আর্মি। যার জেরে ২০ জনের বেশি নিহত হয়। তারপর ফের এই ট্রেন হাইজ্যাকের ঘটনা, রীতিমতো পাকিস্তানের রাজনীতিতে অস্থিরতা বৃদ্ধি করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন