আফগানিস্তানে (Afghanistan) আবার মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার উপরে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালিবান সরকার (Taliban)। এই ঘটনায় ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ (United Nation)। ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (US)।
২০২১ সালের আগস্টে, কাবুল দখলের পরই আফগান মেয়েদের স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পড়াশুনার অধিকার কেড়ে নিয়েছিল তালিবান। পরে, আন্তর্জাতিক চাপে মেয়েদের পড়াশুনার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু, মঙ্গলবার- উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে মহিলাদের সেই অধিকার খর্ব করেছে তালিবান সরকার।
দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠিয়ে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী নেদা মোহাম্মদ নাদিম জানিয়েছেন, ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আফগানিস্তানে নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে।’
এক টুইট বার্তায়, আফগানিস্থানের বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের পড়াশোনার উপর অনির্দিষ্টকালীন নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র জিয়াউল্লাহ হাশিমি (Ziaullah Hashimi)।
আর, এই নিষেধাজ্ঞার পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। 'গভীর উদ্বেগ' করেছেন তিনি।
গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক এক বিবৃতিতে জানান, 'গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মহাসচিব জানিয়েছে, শিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র নারী ও মেয়েদের সমান অধিকার লঙ্ঘন করছে না, এটি দেশের ভবিষ্যতের উপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে।'
উচ্চশিক্ষায় মহিলাদের উপর তালিবানি নিষেধাজ্ঞার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন বিদেশ সচিব এন্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেন, 'আফগানিস্তানের সকলের অধিকারকে সম্মান না করা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বৈধ সদস্য হওয়ার আশা করতে পারে না তালিবানরা। এই সিদ্ধান্ত তালিবানদের জন্য করুণ পরিণতি বয়ে নিয়ে আসবে।'
একইসঙ্গে তিনি বলেন, 'কোনও দেশ উন্নতি করতে পারে না, যখন সে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষকে আটকে রাখা হয়।'
প্রসঙ্গত, গত তিন মাস আগেই আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন কয়েক হাজার মহিলা। তখন তাঁদের অধ্যয়নের বিষয়ের ওপর ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। বিশেষ করে পশুচিকিত্সা বিজ্ঞান, প্রকৌশল, অর্থনীতি, সাংবাদিকতার মতো বিষয় নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল তালিবান। কিন্তু, নয়া নির্দেশিকা মহিলাদের উচ্চশিক্ষা ও স্বপ্নপূরণের উপরই আঘাত হেনেছে।
ক্ষুব্ধ এক ছাত্রী বলেন, 'আমি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারি? আমি বিশ্বাস করতাম যে পড়াশোনা করে আমার ভবিষ্যৎ পরিবর্তন করতে পারব, আমার জীবনে আলো আনতে পারব। কিন্তু তারা (তালিবান) তা ধ্বংস করে দিয়েছে।'
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।