শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, 'স্টপ আদানি' শ্লোগান তুলে আজ দুপুর ২ টায় শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর রাস্তায় নামছে সে দেশের বিক্ষুদ্ধ জনগন। 'ম্যাজেস্টিক সিটির সামনে' তাঁরা জমায়েত শুরু করে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চাপে শ্রীলঙ্কায় আদানি গোষ্ঠীকে সেদেশে বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি সামনে আসার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে শ্রীলঙ্কার মানুষ। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় 'স্টপ আদানি' লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দল সমাগি জন বালাওয়াএগা। দলের তরফে বলা হয়েছে, বেআইনি ভাবে শ্রীলঙ্কায় ঢুকছে বিদেশি শক্তি। নরেন্দ্র মোদীর 'কুখ্যাত বন্ধু'দের প্রশ্রয় দিচ্ছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে (Gotabaya Rajapaksa)।
ঘটনাটি আসলে কি?
সম্প্রতি, শ্রীলঙ্কার সিলন ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের (CEB) চেয়ারম্যান এমএমসি ফার্দিনান্দো (MMC Ferdinando) সংসদীয় কমিটির প্রশ্নের উত্তরে জানান, ‘রাজাপক্ষে (শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে) আমাকে বলেছিলেন, ৫০০ মেগাওয়াটের বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির দায়িত্ব আদানি গ্রুপকে দিতে চান মোদী। বেশ জোর দিয়েই সেই প্রস্তাব করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।'
অর্থাৎ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) চাপে পড়েই বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছিল আদানি গোষ্ঠীকে। তবে, ফার্দিনান্দো এই দাবী অস্বীকার করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন এমএমসি ফার্দিনান্দো। তারপরেও থেমে নেই বিতর্ক।
এদিকে, এই ঘটনায় 'হতাশা' প্রকাশ করেছে আদানি গোষ্ঠী (Adani Group)। গোষ্ঠীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, 'প্রতিবেশীদের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখেই শ্রীলঙ্কায় বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলাম আমরা। দুই দেশের মধ্যে বহুদিন ধরেই সুসম্পর্ক রয়েছে। দায়িত্বশীল শিল্পগোষ্ঠী হিসাবে এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতেই বিনিয়োগ করেছি। এই বিতর্ক হওয়ার কারণে আমরা সত্যিই খুব হতাশ।'
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এই বিতর্ক নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। তবে, এই ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। টুইটারে তিনি লিখেছেন, 'শ্রীলঙ্কার ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান তাদের তদন্ত কমিশনকে জানিয়েছেন যে- শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট তাকে বলেছিলেন যে, ভারতের মোদী সরকার আদানিকে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প দেওয়ার জন্য জোর দিয়েছে। এটি বোফর্সের চেয়ে বড় কেলেঙ্কারি। '
প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কা এখন চরম আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে। জনরোষে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরতে বাধ্য হয়েছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে (Mahinda Rajapaksa)। সেই জায়গায় বসেছেন রনিল বিক্রমাসিংহে (Ranil Wickremesinghe)। তবে প্রেসিডেন্ট পদে রয়ে গিয়েছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। আর শ্রীলঙ্কাকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে মোদী সরকার।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।