

সোমবার টেক্সাসের সান আন্তোনিও শহরে একটি ট্র্যাক্টর-ট্রেলারের ভিতরে ৪৬ জন পরিযায়ীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শহরের কর্মকর্তাদের অনুমান, মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে হওয়া মানব পাচারের ঘটনার সঙ্গে এটি জড়িত।
আই-৩৫ হাইওয়ের কাছাকাছি ট্রাকটি পাওয়া গেছে। যেটি মেক্সিকান সীমান্ত থেকে সান আন্তোনিওর মধ্যে যোগাযোগ রক্ষাকরে। প্রচুর পরিমাণে ট্রাক এই হাইওয়ে দিয়ে চলাচল করে যে কারণে এটি চোরাচালান করিডোর হিসেবে জনপ্রিয়।
সান আন্তোনিও ফায়ার ডিপার্টমেন্টের এক আধিকারিক বলেছেন, শহরের দক্ষিণ উপকণ্ঠে একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে রেলপথের ট্র্যাকের পাশে ট্রাকটিকে দেখতে পান তাঁরা। এর মধ্যে "মৃতদেহের স্তুপ" ছিল এবং জলের কোনও চিহ্ন ছিলনা। বদ্ধ ট্রাকের ভেতর প্রচন্ড গরম সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান করছেন তিনি।
ফায়ার বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে যে, ট্রেলারের ভিতর থেকে আরও ১৬ জন লোককে উদ্ধার করা হয়েছিল। তাদের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। যাঁর মধ্যে চারজন নাবালকও ছিল, তবে মৃতদের মধ্যে কোনও শিশু ছিল না।
সান আন্তোনিও ফায়ার চিফ চার্লস হুড এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, "আমরা যে রোগীদের দেখেছি তাঁদের দেহ যথেষ্ট উত্তপ্ত ছিল, তারা হিট স্ট্রোক এবং ক্লান্তিতে ভুগছিলেন। এই ট্র্যাক্টর-ট্রেলারটি রেফ্রিজারেটেড ছিল কিন্তু সেখানে কোনও দৃশ্যমান শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ইউনিট ছিল না।"
সোমবার মেক্সিকান সীমান্ত থেকে প্রায় ১৬০ মাইল (২৫০কিমি) দূরে অবস্থিত সান আন্তোনিওর তাপমাত্রা ছিল ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। সাথে ছিল উচ্চ আর্দ্রতা।
শহরের পুলিশ প্রধান উইলিয়াম ম্যাকম্যানাস বলেছেন, পাশের একটি ভবনে কর্মরত এক ব্যক্তি সাহায্যের জন্য চিৎকার শুনতে পেয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। তিনি এসে দেখেন, ট্রেলারের দরজাটি আংশিক খোলা এবং ভিতরে তাকিয়ে দেখেন বেশ কয়েকটি মৃতদেহ রয়েছে।
ম্যাকম্যানাস আরও জানিয়েছেন, তাঁর ধারণা অনুযায়ী এটি শহরে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ঘটনা। এই ঘটনার পরে তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। যদিও এই ঘটনার সাথে তাঁদের জড়িত থাকার বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য যথেষ্ট কঠিন পরিস্থিতি তৈরী করবে বলে মনে করা হচ্ছে। মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ড ট্রাকের ভিতর শ্বাসরোধ হয়ে পরিযায়ীদের মারা যাওয়ার ঘটনাকে ট্যুইটারে "টেক্সাসের ট্র্যাজেডি" বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও বলেছেন যে, যদি সম্ভব হয় তাহলে কনস্যুলার কর্মকর্তারা সেই হাসপাতালে যাবেন যেখানে আহতদের রাখা হয়েছে। এব্রার্ড জানিয়েছেন, দুই গুয়াতেমালানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুয়াতেমালার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্যুইটারে জানিয়েছে, সেখানে দুজন গুয়াতেমালান নাবালক আছে কিনা এবং তারা কী অবস্থায় আছে তা যাচাই করতে কনস্যুলার কর্মকর্তারা হাসপাতালে যাচ্ছেন।
হন্ডুরান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, হিউস্টন এবং ডালাসে দেশটির কনস্যুলেটগুলি এই ঘটনাটির তদন্ত করবে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন