
কেরালায় বিধানসভা উপনির্বাচনে দলের হতাশাজনক ফলাফলের পর পদ থেকে ইস্তফা দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রন। তিনি নির্বাচনী পরাজয়ের নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এই কেন্দ্রে এবার বিজেপির ভোট কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ।
যদিও তাঁর এই মত উড়িয়ে দিয়েছেন দলের কেরালার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা প্রকাশ জাভড়েকর। তিনি বলেন, এই কেন্দ্রগুলির কোনোটাই বিজেপির ছিল না। কাজেই এই বিষয়ে সুরেন্দ্রনের ইস্তফার মত কিছু হবার সম্ভাবনা নেই। আমরা ভালো করার চেষ্টা করছি। এবার পুরসভা এবং বিধানসভা ভোটে নজর দেওয়া হবে।
নিজের পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশের পাশাপাশি তিনি দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেছেন। তাঁর মতে, দলের মহিলা নেত্রী শোভা সুরেন্দ্রন এবং রাজ্যের বেশ কিছু শীর্ষ নেতৃত্ব পালাক্কাড কেন্দ্রে দলের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন।
পালাক্কাড কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি এবার জয়ের আশা করেছিল। কেরালার ২০২১ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে ‘মেট্রো ম্যান’ কে সুরেন্দ্রন ৩,৮৫৯ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। সেই হিসেবে এবার এই আসন জয়ের জন্য ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি। যদিও এবার পালাক্কাড কেন্দ্রে বিজেপির ভোট কমার পাশাপাশি জয়ের ব্যবধানও অনেক বাড়িয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী রাহুল মামকুতাথিল। তিনি জয়ী হয়েছেন ১৮,৮৪০ ভোটে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কেরালায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এই কেন্দ্রে শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে। শোভা সুরেন্দ্রন এই কেন্দ্রের প্রার্থী হবার অন্যতম দাবিদার হলেও তাঁকে উপেক্ষা করে প্রার্থী করা হয় সি কৃষ্ণকুমারকে। যে ঘটনায় প্রকাশ্যেই প্রতিক্রিয়া জানান কেরল বিজেপির একাধিক নেতৃত্ব। নির্বাচনের আগেই পালাক্কাডের প্রভাবশালী বিজেপি নেতা সন্দীপ ভ্যারিয়ার বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন।
২০১১ সাল থেকে পালাক্কাড কেন্দ্রে লাগাতার জয়ী হয়ে আসছে কংগ্রেস। শেষবার ২০২১ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে ৩৮.০৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী শাফি পারাম্বিল। সেবার এই কেন্দ্রে বিজেপি পায় ৩৫.৩৪ শতাংশ ভোট এবং সিপিআইএম পায় ২৫.৬৪ শতাংশ ভোট।
২০১১ সালে পালাক্কাড আসনে বিজেপি পেয়েছিল ১৯.৮৬ শতাংশ ভোট এবং ২০১৬ সালে পায় ২৯.০৮ শতাংশ ভোট।
যদিও ২০২৪ উপনির্বাচনে বিজেপির ভোট কমেছে ৬.৭১ শতাংশ। কংগ্রেসের ভোট বেড়েছে ৬.২১ শতাংশ এবং বাম প্রার্থীর ভোট বেড়েছে ১.৬৪ শতাংশ।
তবে পালাক্কাড কেন্দ্রে ৬ শতাংশ ভোট কমলেও অন্য কেন্দ্র চেলাক্কারা কেন্দ্রে বিজেপির ভোট বেড়েছে ৫.৮১ শতাংশ। এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের ভোট বেড়েছে ৪.৯৩ শতাংশ এবং সিপিআইএম-এর ভোট কমেছে ৯.৯৭ শতাংশ।
অন্যদিকে ওয়াইনাড লোকসভা কেন্দ্রেও ভোট কমেছে বিজেপির। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী কে সুরেন্দ্রন ১৩ শতাংশ ভোট পেলেও এবার বিজেপির ভোট কমেছে ১.৫১ শতাংশ। এই কেন্দ্রে বামেদের ভোট কমেছে ৪.০১ এবং কংগ্রেসের ভোট বেড়েছে ৫.৩ শতাংশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন