
রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ক্রমশ মাথাচাড়া দিচ্ছে। একেই গেহলট পাইলট দ্বন্দ্বে দীর্ণ কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন গেহলট মন্ত্রীসভার মন্ত্রী রাজেন্দ্র গুধা। এবার পাইলট এবং গুধার বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘাতে নামলেন রাজ্যেরই দুই বিধায়ক।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের পাশে দাঁড়িয়ে দিদওয়ানার কংগ্রেস বিধায়ক চেতন দুদি এবং গেহলট সরকারের মন্ত্রী মহেশ জোশী শচীন পাইলট এবং রাজেন্দ্র গুধার ভূমিকাকে কড়া সমালোচনা করলেন। তাঁরা বলেন, "কিছু দায়িত্বশীল মানুষ যখন নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ আনে তখন তা খুবই অস্বস্তিকর।"
এদিন গুধার নাম না করে জোশী বলেন, "এই ধরণের নেতাদের নিজেদের সরকারের দিকে আঙুল তোলার আগে মনে রাখা উচিৎ এই ধরণের অভিযোগ তুললে তা তাদের দিকেও আসে।" উল্লেখ্য, সম্প্রতি গেহলট সরকারের মন্ত্রী রাজেন্দ্র গুধা বলেন, "রাজস্থান সরকারও কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের মত ৪০ শতাংশ কমিশনের নীতিতে চলছে।"
সোমবার জয়পুরে শচীন পাইলটের এক সভায় রাজেন্দ্র গুধার এই মন্তব্যের পর ওইদিন রাতেই মহেশ জোশী এক বিবৃতিতে বলেন, "যারা এই ধরণের অভিযোগ আনছেন তাদের মনে রাখা উচিৎ দুর্নীতির কোনো বিষয় সামনে এলেই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। দুর্নীতির প্রশ্নে তিনি জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলেন।"
তাৎপর্যপূর্ণভাবে ২০২০ সালে শচীন পাইলটের বিদ্রোহের সময় পাইলট ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও তিনি অশোক গেহলটের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এবং বলেছিলেন পাইলটের দাবি অবাস্তব। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
অন্যদিকে সোমবার রাতে গেহলট সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে এক ট্যুইট বার্তায় চেতন দুদি বলেন, আপনারা কেন যুবসমাজকে বিভ্রান্ত করছেন? ইতিমধ্যেই প্রশ্ন ফাঁসের কারণে রাজস্থান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন। রাষ্ট্রপতি সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।
তিনি প্রশ্ন ফাঁসের কারণে চাকরি হারানো প্রার্থীদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে পাইলট এবং রাজেন্দ্র গুধার মন্তব্য সম্পর্কে বলেন, "এখনও পর্যন্ত ইতিহাসে কেউ এই ধরণের কোনো দাবি করেনি। রাজস্থান সরকার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় যে ব্যবস্থা নিয়েছে তা এখনও পর্যন্ত সমস্ত রাজ্যের কাছে দৃষ্টান্ত। রাজ্যের যুবসমাজ এই ঘটনা খুব ভালোভাবে জানে।"
দুদি বলেন, "রাজস্থানে প্রশ্ন ফাঁসের কারণে ১৫০ জনের বেশি মানুষ জেলে আটক আছেন। এই ঘটনার প্রতিরোধে বিশেষ আইন করা হয়েছে।"
কংগ্রেস বিধায়ক আরও বলেন, "রাজস্থানের সবথেকে বড়ো দুর্নীতির ঘটনা হল সঞ্জীবনী কেলেঙ্কারি। যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘর লুট করা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার জনসভায় শচীন পাইলট সেই দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলেননি। গতকালের সভার পর সঞ্জীবনী কেলেঙ্কারির মূল নায়ক শচীন পাইলটের সমর্থনে ট্যুইট করেছেন। এটাই গতকালের সভার আসল সত্য। কারণ মানেসরের ঘটনার সময় থেকেই দুজনের বন্ধুত্ব।"
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে শচীন পাইলট এবং তাঁর বাহিনীর বিদ্রোহের সময় তাঁরা গুরগাঁও-এর নিকটবর্তী মানেসরের একটি রিসর্ট-এই ছিলেন।
সোমবার থেকে কংগ্রেস বিধায়ক শচীন পাইলট দুর্নীতি এবং প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে আজমেড় জয়পুর জন সংঘর্ষ পদযাত্রা শুরু করেছেন।
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন