
লোকসভার আগে বিরোধী ঐক্যে কি নয়া সমীকরণ দেখা যাবে? দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কংগ্রেসের সমর্থন চাওয়া নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। মমতা ব্যানার্জিও কি একই পথে হাঁটবেন? একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে রাজনৈতিক মহলে।
সম্প্রতি দিল্লি সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে আমলাদের নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। যদিও সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পায় আপ। তবে কেন্দ্র পাল্টা নতুন অর্ডিন্যান্স জারি করে আমলাদের বদলি ও নিয়োগের দায়িত্ব নিজেদের হাতেই রাখতে চায়। অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রায় সমস্ত অ-বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কেন্দ্রের 'অসাংবিধানিক' এবং 'অগণতান্ত্রিক' নীতির বিরুদ্ধে বৈঠক করছেন। পাশাপাশি এই বিষয়ে কংগ্রেসের সমর্থন চেয়েছেন কেজরিওয়াল।
নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে কেজরিওয়াল লেখেন, 'শুক্রবার সকালে কেন্দ্রের অসাংবিধানিক এবং অগণতান্ত্রিক অর্ডিন্যান্স পাস করার বিরুদ্ধে এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ ও যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা করার জন্য কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং রাহুল গান্ধীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে।'
কিছু দিন আগেই কেজরিওয়াল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সাথেও দেখা করেন। সাথে ছিলেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। সেই বৈঠক শেষে কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। তবে তাঁর মুখে কংগ্রেস নামটা শোনা যায়নি। শুধু ওই বৈঠক নয়, কর্ণাটক নির্বাচনে কংগ্রেসের জয়লাভের পরেও তিনি কংগ্রেসের নাম উল্লেখ করেননি।
ফলে প্রশ্ন উঠছে কেজরিওয়ালের এই পদক্ষেপ কি ভালোভাবে নেবে মমতা ব্যানার্জি? অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতার জন্য সমর্থন চাইলেও এর মধ্যে নয়া সমীকরণ দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, আগামী বছরই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে যদি বিরোধী ঐক্য আরও মজবুত করা যায় তাতে বিজেপির ক্ষতিই হবে। সেই লক্ষ্যেই হয়তো কংগ্রেসের সমর্থন চাইছে আপ। তারা হয়তো বুঝতে পেরেছে বিরোধী জোট কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে করা সম্ভব নয়।
আবার বিরোধী ঐক্য নিয়ে একাধিক মত দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কখনও তিনি বলেছিলেন, কারুর দরকার নেই, লোকসভা ভোটে একলা চলো নীতি অবলম্বন করবে তৃণমূল। আবার কখনও বলেছেন যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী তারা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। তবে বার বার কংগ্রেসের থেকে নিজের দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন। এবার কেজরিওয়ালের সিদ্ধান্তে মমতা ব্যানার্জি কতটা একমত হতে পারছেন সেটাও দেখার।
প্রসঙ্গত, মমতা ব্যানার্জির অবস্থান নিয়ে এর আগে কটাক্ষ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন, "কর্ণাটকে যে ভোট হলো সেখানে মমতা ব্যানার্জি একবারও বলেছিলেন বিজেপিকে হারাতে বিরোধীদের ভোট দিন? একবারও বলেননি। বিহারে এবং উত্তরপ্রদেশে ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন। কিন্তু কর্ণাটকে একবারও যাননি। কর্ণাটকে বিজেপি হারার পর সবচেয়ে দুঃখ পেয়েছে মোদী, আর মুখ শুকিয়ে গেছে দিদির।"
অন্যদিকে, কেজরিওয়াল শুধু মমতা ব্যানার্জি নয়, মুম্বইতে গিয়ে শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরে, এনসিপি সভাপতি শরদ পাওয়ারের সাথেও দেখা করেন। আবার শুক্রবার একই ইস্যুতে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-র সাথে বৈঠক করেন তিনি।
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন