রাজ্যের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামের থেকেও সাপের কামড়ের চিকিৎসায় পিছিয়ে 'স্মার্ট সিটি' নিউটাউন! সাম্প্রতিক কালে বেশ কয়েকটি ঘটনা অন্তত সেই প্রশ্নই তুলে দিচ্ছে। যা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত নিউটাউনের স্থানীয় বাসিন্দারা।
কলকাতার উপকন্ঠে গড়ে ওঠা অত্যাধুনিক শহর নিউটাউন। এখনও সম্পূর্ণভাবে তৈরি না হলেও প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস সেখানে। সল্টলেক থেকে নিউটাউনে প্রবেশ করলে চোখে পড়বে 'স্মার্ট সিটি'-র একটি ফলক। এই স্মার্ট সিটিতেই নাকি সাপে কামড়ালে চিকিৎসার জন্য দিশেহারা হতে হয় বাসিন্দাদের। নিউটাউনে কাউকে সাপে কামড়ালে ইকোপার্কের কাছাকাছি রেকজোয়ানি গ্রামীণ হাসপাতালে যেতে হয়। আর রয়েছে চাঁদপুর ও পাথরঘাটা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু সেখানেও নাকি উপযুক্ত পরিষেবা মেলেনা।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে যদি সাপে কামড়ালে চিকিৎসা সম্ভব হয়, তাহলে নিউটাউন কেন পারবে না? নিউটাউনকে কি শুধু নামেই 'স্মার্ট সিটি'?
নিউটাউনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি (NKDA)-কে জানিয়েও সুরাহা মেলেনি। বর্ষাকালে বিভিন্ন মাঠে ঝোপঝাড় বাড়ছে। কিন্তু এনকেডিএ কর্তৃপক্ষের তরফে দ্রুত সেগুলো পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। সম্প্রতি নিউটাউনে এক ভিন রাজ্যের পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে সাপের কামড়ে। তাঁকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি।
এনকেডিএ-র দাবি, নিউটাউনে মূলত দু'ধরণের বিষাক্ত সাপ দেখা যায়। চন্দ্রোবোড়া ও কালাচ। কালাচের কামড়ে এতটাই বিষ থাকে দ্রুত চিকিৎসা না হলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিভিন্ন জায়গায় কার্বলিক অ্যাসিড ছড়ানো হচ্ছে। এখন বর্ষা বলে গাছপালা দ্রুত বেড়ে উঠছে। তবে আমরা বিষয়টির ওপর নজর রাখছি।
চিকিৎসক, বিচারক, পরিবেশবিদ সহ আরও অন্যান্য পেশার মানুষের বসবাস নিউটাউনে। পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে বলছেন, নিউটাউন গড়ে উঠেছিল জলাভূমি ভরাট করে। ফলে জীববৈচিত্রে তার প্রভাব পড়েছে। সাপেদের থাকার জায়গা কমে আসছে। তাই বিভিন্ন আবাসন, রাস্তায় দেখা যাচ্ছে। আমরা সাপ দেখতে পেলে বনদফতরে খবর দিয়ে সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছি। তাদের মেরা ফেলাটা উচিত হবে না। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। আর নিউটাউনের বুকে সাপের কামড়ের চিকিৎসার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।