
শিশুদের কাশি হলেই চিকিৎসকদের পরামর্শ ছাড়াই বাজার থেকে কাফ সিরাপ কিনে আনেন অনেক অভিভাবক। এমনকি সেই ওষুধগুলোর লেবেলও দেখেন না তাঁরা। কাশির ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বারবার অভিযোগ ওঠে। এর আগেও একাধিক ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর এবার ‘ফিক্সড ডোজ কম্বিনেশন’ -এর চারটি ওষুধকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থা।
কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চার বছরের নীচে শিশুদের যখন তখন কাশির সিরাপ খাওয়ানো যাবে না। উল্লেখ্য, বাজারে বিক্রি হওয়া কাশির সিরাপগুলির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকারক হল ‘ফিক্সড ডোজ কম্বিনেশন’ (এফডিসি)-এর ওষুধ। এই ধরনের ‘কম্বিনেশন’ ওষুধগুলি তৈরি হয় নানা গোত্রের ওষুধ মিলিয়ে মিশিয়ে। তাই এগুলি নিষিদ্ধ করা হয়। মূলত ক্লোরফেনিরামিন ম্যালিয়েট ও ফিনাইলেফ্রিন হাইড্রোক্লোরাইড কম্বিনেশনের যে কোনও সিরাপই চার বছরের কমবয়সি শিশুদের খাওয়ানো যাবে না।
এছাড়া কোন ওষুধের মধ্যে কোন উপাদান মেশানো থাকে, তা সকলের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তাই সিরাপের বোতলের গাঁয়ে উপাদানের তালিকা উল্লেখ করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ‘ফিক্সড ডোজ কম্বিনেশন’ ওষুধ বিভিন্ন গোত্রের ওষুধের সঙ্গে মিলেমিশে তৈরি করা হয়। যার ফলে শিশুর শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। যার প্রভাবে শিশুদের তদ্রাচ্ছন্নতা, ঘুমের অভ্যাস পাল্টে যাওয়া, খিদে কমে যাওয়া এমনকি মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ‘ফিক্সড ডোজ কম্বিনেশন’-এর কাশির সিরাপগুলিতে ডোজের পরিমাণ যা বলা থাকে, তার চেয়ে বেশি খেলে ক্ষতি হতে পারে। তাই এমন ওষুধের বিক্রিই বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় সংস্থার তৈরি কাশির সিরাপ খেয়ে আফিকার গাম্বিয়াতে একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এরপর থেকেই দেশে তৎপরতা শুরু হয়েছে। দেশের কোন জায়গায় নিম্নমানের কাশির সিরাপ তৈরি হচ্ছে, সে নিয়ে সমীক্ষা শুরু হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, ৫৪ টি সংস্থা কাশির ওষুধের গুণমান পরীক্ষায় সফল হয়নি। এছাড়া সেই সব কাশির সিরাপে ডাইইথিলিন গ্লাইকল ও ইথিলিন গ্লাইকল নামের দূষক পদার্থের মাত্রা অনেকটাই বেশি। এরফলে শিশুদের কিনডির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এরপরেই চার রকমের কাশির সিরাপ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন