
পহেলগাঁও কাণ্ডের বদলা নিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের প্রত্যাঘাতের সেই কাহিনী পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে মরিয়া বলিউডের পরিচালক-প্রযোজকেরা। আগেই প্রকাশ পেয়েছিল সেই খবর। আর এবার ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সিনেমা ঘোষণা করে তড়িঘড়ি পোস্টারও প্রকাশ করে দিলেন এক পরিচালক। অবশেষে বিতর্কের মুখে এই নিয়ে জনসমক্ষে ক্ষমা চাইলেন পরিচালক উত্তম মহেশ্বরী।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ২৫ পর্যটক ও এক স্থানীয় বাসিন্দা। তার প্রত্যাঘাতে গত মঙ্গলবার রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনা। সেই মিশনের নাম রাখা হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সিনেমার পোস্টার প্রকাশ্যে এনেছে নিকি ভিকি ভাগনানি ফিল্ম এবং দ্য কন্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার। শুক্রবার রাতে সিনেমার পোস্টার প্রকাশ্যে এনেছে তারা। এই ছবির পরিচালনা করবেন উত্তম মহেশ্বরী এবং নিতিন কুমার গুপ্তা।
পোস্টারে দেখা যাচ্ছে, সেনার পোশাক পরিহিতা এক নারী কপালে সিঁদুর দিচ্ছেন। পোস্টারের উপরে লেখা - ‘ভারত মাতা কী জয়।’ পোস্টারে যুদ্ধ বিমানের ছবিও রয়েছে। ভারত-পাক যুদ্ধ আবহে এই পোস্টার প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষুব্ধ নেটনাগরিকরা। নির্মাতাদের এহেন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। কটাক্ষ করে নেটিজনেরা লিখেছেন, “বর্তমানে চলা যুদ্ধ পরিস্থিতিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা, তাও আবার AI দিয়ে তৈরি একটি পোস্টারের মাধ্যমে। এটা নির্লজ্জতার সব সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে”।
নেটিজনদের ক্ষোভের মুখে পড়ে এবার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন পরিচালক উত্তম মহেশ্বরী। সমাজমাধ্যমে এক বিবৃতি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “আমাদের ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাম্প্রতিক বীরত্বপূর্ণ অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর উপর ভিত্তি করে একটি সিনেমার ঘোষণা দেওয়ার জন্য আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। আমাদের উদ্দেশ্য কখনও কারও অনুভূতিতে আঘাত করা বা উস্কানি দেওয়া ছিল না”।
পরিচালকের দাবি, ভারতীয় সেনাদের সাহস, ত্যাগ এবং শক্তি তাঁকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। সে কারণেই তিনি এটি নিয়ে সিনেমা তৈরি করতে আগ্রহী হয়েছেন এবং প্রকাশ্যে আনতে চেয়েছিলেন। উত্তম মহেশ্বরী আরও লিখেছেন, এই সিনেমাটি জাতির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থেকে তৈরি করা হয়েছে, খ্যাতি অর্জনের জন্য নয়। তিনি লিখেছেন, “আমি বুঝতে পারি পরিস্থিতি এবং সংবেদনশীলতা কারও কারও কাছে অস্বস্তি বা যন্ত্রণার কারণ হতে পারে। এজন্য আমি গভীরভাবে দুঃখিত”।
এই ছবিটিকে সিনেমার থেকেও বেশী কিছু বলে অভিহিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, "এটি কেবল একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি সমগ্র জাতির আবেগ এবং গোটা বিশ্বের কাছে দেশের একটি সামাজিক চিত্র।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন