'এতটা আধুনিক হইনি, বাবা বা ছেলেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে দেব' - মমতা শঙ্করের মন্তব্যে বিতর্কের ঝড়

People's Reporter: অভিনেত্রীর প্রশ্ন, "স্যানিটারি ন্যাপকিন তো প্রয়োজনীয় দ্রব্য। সেটা তো মানুষ কিনবেন। এতদিন এর বিজ্ঞাপন অন্যভাবে দেখানো হত। কিন্তু এখন লাল রঙ দেওয়া হয়। নাহলে কি জিনিসটা বিক্রি হবে না?"
মমতা শঙ্কর
মমতা শঙ্করছবি - মমতা শঙ্করের ফেসবুক পেজ
Published on

"এতটা আধুনিক হতে পারিনি যে বাবা বা ছেলেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে পাঠাবো!" সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনই মন্তব্য করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মমতা শঙ্কর। যা নিয়ে নেটপাড়াজুড়ে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। সকলেই অভিনেত্রীর মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এর আগে আধুনিক মহিলাদের শাড়ি পরার 'ধরণ' নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে যৌনকর্মীদের প্রসঙ্গ টেনে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন মমতা শঙ্কর।

সম্প্রতি কলকাতার এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বিজ্ঞাপনের ধরণ ও অন্তর্বাসের খোলাখুলি বিজ্ঞাপন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মমতা শঙ্কর। বিজ্ঞাপনের ধরণ বদলের প্রসঙ্গে স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপনের প্রসঙ্গ টেনে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বলেন, "স্যানিটারি ন্যাপকিন তো একটা প্রয়োজনীয় দ্রব্য। সেটা তো মানুষ কিনবেন। এত দিন এর বিজ্ঞাপন অন্যভাবে দেখানো হত। কিন্তু এখন সেখানে লাল রঙ দেওয়া হয়"।

অভিনেত্রীর প্রশ্ন, "সেখানে লাল রংটা দিয়ে বোঝাতে হবে। মানুষ কি দিনে দিনে বোকা হচ্ছে? আমরা কি অসভ্য হচ্ছি? আমরা এগোচ্ছি না পিছিয়ে যাচ্ছি? আমরা এত বোকা হয়ে যাচ্ছি যে আমাদের চামচে করে গিলিয়ে দিতে হবে? না হলে কি জিনিসটা বিক্রি হবে না?"

এই বিজ্ঞাপন দেখে লজ্জাবোধ করেন অভিনেত্রী। মমতা শঙ্করের কথায়, "আমার লজ্জা করে। আমি টিভি দেখছি, সেখানে এই অ্যাড চলছে, আর তার মাঝে কেউ এসে গেলে আমার লজ্জা করে। আমি এতটা আধুনিক হতে পারিনি যে, আমার ছেলেকে ওরকম কিছু একটা কিনতে পাঠাবো, বা আমার বাবাকে আমি কিনতে দেব। হ্যাঁ, আমার স্বামীকে দিয়ে আমি কেনাতে পারি"।

বাড়িতে স্বামী উপস্থিত না থাকলে তখন কী করবেন? জবাবে অভিনেত্রী জানান, "আমি একটা কাগজে লিখে দেব। আমার বাড়ির কাজের লোককেও যদি পাঠাতে হয়, তাহলে লেখা কাগজটা দেব। আমরা এত দিন বড় হয়েছি, কই কাউকে তো আমাদের বলতে হয়নি। কোনও ছেলে বন্ধুকে বলতে হয়নি। কেন বলব, আমি নিজেকে ছোটো করব কেন?"

মেয়েদের ঋতুস্রাব নিয়ে যে ট্যাবু আছে, তাতে কি তিনি বিশ্বাসী? মমতা শঙ্করের কথায়, "না ট্যাবু না। এর প্রয়োজনীয়তা সকলে জানেন। কিন্তু আমি পারব না ওটা করতে। আমরা টয়লেটে যাই কেন? এই হিপোক্রেসিটা করি কেন? এতটা আধুনিক হলে রাস্তাতেই তো সব করা যায়। তাহলে তো পাগলকে আমি বলব যে সে বেশি আধুনিক। সে জামা কাপড় না পরেও রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখন তো আমরা সেই পর্যায়ে চলে গিয়েছি। আমরা প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের সময় কি এগুলো ছিল না? নাকি আমরা দোকান থেকে কিনতাম না?"

অভিনেত্রীর এই সাক্ষাৎকার সামনে আসার পরেই নেটিজেনরা তাঁর মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। একজন লিখেছেন, "স্যানিটারি ন্যাপকিন যদি লজ্জার বিষয় হয় তাহলে তো সন্তান প্রসব করাও লজ্জার! বলছি কাকি (সবাইকে কাকিমা বলি না) আপনি পুরুষ ডাক্তারের কাছে যাবেন না কিন্তু! আর স্যানিটারি ন্যাপকিন বাড়িতে বানিয়ে নেবেন"।

অন্য আরেক জনের কথায়, "আরে! এই মহিলার সমস্যা কী? স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপন দেখে ওঁনার লজ্জা করে!!! এইসব দেখতে, শুনতে হবে?"

অন্য একজন লিখেছেন, "ঋতুস্রাব স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। স্যানিটারি ন্যাপকিন এমন এক প্রয়োজনীয় বস্তু যা কোটি কোটি মহিলাকে ইনফেকশন হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। সেটা কে কিনতে যাবে আর কে যাবে না এখানে এত বাছ-বিচার আসছে কীভাবে? তাহলে তো সর্দি হলে সর্দির ওষুধ কিনতেও লজ্জা পেতে হবে। তিনি ব্যক্তিগত বিশ্বাস আঁকড়ে থাকতেই পারেন। তবে একজন মানুষ ভালো অভিনয় করেন বা অসাধারণ নৃত্যশিল্পী মানে এমন নয় যে দুনিয়ার সমস্ত বিষয়ে তাঁর থেকে এক্সপার্ট ওপিনিয়ন নিতে হবে"।

মমতা শঙ্কর
ময়মনসিংহের ওই ভাঙা বাড়ির সঙ্গে সত্যজিতের কোনও সম্পর্ক নেই! বিতর্কের মাঝে আর কী জানাল ঢাকা?
মমতা শঙ্কর
শ্রাবণ মাসে আমিষ বিক্রির অভিযোগে KFC সহ দুটি রেস্তোরাঁয় তাণ্ডব হিন্দু রক্ষা দলের! নীরব পুলিশ

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in