
সেন্সর বোর্ডের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে ২৬ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে নীরজ ঘাইওয়ানের বহুল আলোচিত ছবি 'হোমবাউন্ড' (Homebound)। তবে প্রায় ৭৭ সেকেন্ডের ফুটেজ বাদ দিতে হয়েছে পরিচালককে। অন্যদিকে, ছবিটি ইতিমধ্যেই ভারতের পক্ষ থেকে অস্কারে পাঠানো হয়েছে, ফলে ছবি ঘিরে কৌতূহল আরও বেড়েছে।
১১টি পরিবর্তনের শর্তে ছাড়পত্র
বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রথমে সেন্সর বোর্ডের পরীক্ষক কমিটি (Examining Committee) আপত্তি তুলেছিল বেশ কয়েকটি দৃশ্য নিয়ে। পরে বিষয়টি যায় রিভাইজিং কমিটির (Revising Committee) হাতে। দীর্ঘ আলোচনার পর ১২ সেপ্টেম্বর ছবিটিকে U/A 16+ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, তবে শর্ত রাখা হয় ১১টি পরিবর্তনের।
সব মিলিয়ে প্রায় ৭৭ সেকেন্ডের ফুটেজ বাদ দিতে হয়েছে পরিচালককে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট ম্যাচের দৃশ্যে, যেখানে প্রায় ৩২ সেকেন্ডের সংলাপ ও ভিজ্যুয়াল বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ সেকেন্ডের একটি সংলাপ “আলু গোবি...খাতে হ্যায়” সম্পূর্ণ মুছে ফেলা হয়েছে। দুই সেকেন্ডের একটি পূজা করার দৃশ্যও ছেঁটে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া একাধিক স্থানে শব্দ মিউট বা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। যেমন ২১ মিনিটের মাথায় একটি সংলাপ বাদ দিয়ে তার জায়গায় অন্য শট বসানো হয়েছে। এমনকি 'জ্ঞান' শব্দটিও বাদ দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। আরও ১৬ সেকেন্ড ও ২০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের দুটি আলাদা দৃশ্য এবং একটি গাড়ি চলাচলের ভিজ্যুয়ালকেও বদলাতে হয়েছে সেন্সর বোর্ডের নির্দেশে। ফলে ছবির চূড়ান্ত দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ১২২ মিনিট বা ২ ঘণ্টা ২ মিনিট।
গল্প ও পটভূমি
'হোমবাউন্ড' মূলত উত্তর ভারতের গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে তৈরি। দুই শৈশবসঙ্গীর গল্প, যাদের স্বপ্ন পুলিশে যোগ দিয়ে সম্মান অর্জন করা। কিন্তু বাস্তব জীবনের চাপ, দারিদ্র্য ও সিস্টেমের জটিলতা তাদের সম্পর্ক ও স্বপ্ন—দুটোকেই চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করায়। ছবিতে অভিনয় করেছেন জাহ্নবী কাপুর, ঈশান খট্টর, বিশাল জেঠওয়া। দলিত মেয়ে সুধা ভারতীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহ্নবী কাপুর।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
ছবিটি ইতিমধ্যেই কান চলচ্চিত্র উৎসব এবং টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। অভিনয়, গল্প বলার কৌশল ও নন্দনতত্ত্বের জন্য সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছে 'হোমবাউন্ড'। অস্কারের জন্য ভারত সরকারের মনোনয়ন পাওয়ায় এটিকে এখন আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রতিযোগিতায় অন্যতম শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন