নির্বাচনী প্রচার পর্বে বারবার নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গে ২০০ আসন পেরিয়ে যাওয়ার দাবি করেছিলেন। এমনকি বিভিন্ন সংস্থার করা এক্সিট পোলের ফলাফল প্রকাশিত হবার পরেও নিজেদের জয় নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও রবিবার ভোটগণনা শুরু হবার পরেই ছবিটা একটু একটু করে বদলাতে থাকে। এখনও পর্যন্ত গণনার যা ট্রেন্ড তাতে ২০০ আসন তো দূরের কথা, বিজেপির ঝুলিতে ১০০ আসন আসবে কিনা তাই নিয়ে ঘোর সন্দেহ।
এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে তৃণমূল এগিয়ে আছে ২০৮ আসনে। বিজেপি এগিয়ে ৮০ আসনে। আর ফলাফলের এই ট্রেন্ড সামনে আসার পরেই বিজেপি শিবিরের রাজ্য নেতৃত্ব আঙুল তোলা শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে। উল্টোদিকে ‘খেলা হবে’ বলে যে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছিলো তৃণমূল ফলাফলের গতিপ্রকৃতিতে দেখা যাচ্ছে খেলা হয়েছে নিঃশব্দে।
এমনিতেই এবারের নির্বাচনে রাজ্য নেতৃত্বের ওপর খুব একটা ভরসা রাখেনি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্যকে বিভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিলো বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বের ওপর। যা নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের ক্ষোভ ছিলোই। এছাড়াও স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমঝোতার অভাব বহু জায়গাতেই বিপাকে ফেলেছে বিজেপিকে।
বিজেপির অন্দরে সব থেকে বেশি ক্ষোভ ছিলো বহিরাগত নেতাদের নিয়ে। একাধিক জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি করে আসা নেতা কর্মীদের উপেক্ষা করে যেভাবে তৃণমূল ত্যাগীদের দলে নেওয়া হয়েছিলো তাতে ক্ষোভ ছড়িয়েছিলো দলের নীচুতলায়। পাশাপাশি রাতারাতি দলবদল করা নেতৃত্ব বহু জায়গায় প্রার্থী হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মনেও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিলো। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে আগেই অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও নরেন্দ্র মোদী তাঁর নির্বাচনী প্রচারে এসে যেভাবে মমতা ব্যানার্জিকে ‘দিদি ও দিদি’ বলে সম্বোধন করেছিলেন তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিলো। এর প্রভাবও নির্বাচনী ফলাফলে পড়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মমতা ব্যানার্জির ব্যক্তিগত ক্যারিশমার কাছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ম্যাজিক কাজ করেনি।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।