পরিসংখ্যান বলছে, লোকসভা ভোটের নিরিখে তিনি পিছিয়ে আছেন প্রায় ১৪ হাজার ভোটে। তাঁর এবারের লড়াইটা শুধু ক্ষমতায় ফিরে আসার লড়াই নয়, অনেকটাই পিছন থেকে অভিযান শুরু করার মতোই বিষয়। তাই চৈত্রের রোদকে উপেক্ষা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যাওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন যাদবপুর কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা তথা সিপিআইএমের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী।
পাশাপাশি এই প্রচার উপলক্ষে তিনি হয়তো তাঁর রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন। পথে দেখা পেলেন তাঁরই এককালের সতীর্থের, যিনি ঘাসফুল হয়ে পদ্মফুলের হাত ধরেছেন। দেখা মাত্রই সুজনবাবু তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। রাজনীতির অভিজ্ঞতা থেকে ওই ব্যক্তিকে শুধু বললেন, এবারের নির্বাচনটা রাজ্য ও দেশের সরকার গঠনের ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ঠিক জায়গায় ভোটটা পড়া দরকার। পাল্টা জবাব পেলেন, তুমি আমাদের বিধায়ক। ব্যাস এটুকুই যথেষ্ট।
এই কথোপকথনের সময় সেখানে উপস্থিত সচেতন মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন, হাওয়া কি তবে ঘুরছে? উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আর দেখা করতে হবে ২ মে পর্যন্ত। কিন্তু যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষ লোকসভার ভুল যে আর করতে চান না, তা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
মঙ্গলবার সুজনবাবু প্রচারে গিয়েছিলেন হালতুর পূর্বাচল এলাকায়। সেখানে এমনই ঘটনার সাক্ষী হলেন তিনি। তবে সেই ব্যক্তির ভাগ্নে কিন্তু এখনও লাল ফেরাও, হাল ফেরাও স্লোগানে বিশ্বাসী। তাই মামার দলবদলেও বামপন্থাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা স্বপ্নেও ভাবেননি। আর তাই মামার এই বক্তব্যে অবাক হয়েছেন খোদ ভাগ্নেও।
এদিন তল্লাটের বাসিন্দা উচ্চ মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত—সবার সঙ্গে তাঁর পূর্ব জনসংযোগ বজায় রাখার ফল পাওয়ার নমুনাও বারবার ধরা পড়ল। অশীতিপর বৃদ্ধের হাউহাউ কান্না, এই প্রিয় নেতাকে তিনি দেখতে চান মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে। ব্যতিক্রমী চিত্র পূর্বাচল দক্ষিণেও। সদ্য স্নাতক হয়েছেন বছর বাইশের যুবক। কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এদিন সুজনকে দেখে আবেগ সামলাতে পারলেন না। ভুল করবেন না বলে কথা দিলেন তাঁকে।
হালতুর লালবাহাদুর শাস্ত্রী রোড ও পূর্বাচল রোডের দুপাশে প্রায় হাজারখানেক পরিবারের কাছে পৌঁছে যান সুজন। অনেক অভিযোগও তাঁর কানে এসেছে। কোথাও এলাকার নিকাশি সমস্যা, কোথাও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি বা উজ্জ্বলা যোজনায় গ্যাস না-পাওয়ার সমস্যা। এমনকী, ত্রিশঙ্কু ফলের পর তাঁদের অবস্থান কী হবে, তা নিয়েও সমর্থকদের কাছে তাঁকে আশ্বাস দিতে হয়েছে এদিন।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।