WB Election 21: নন্দীগ্রামে স্বমহিমায় অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন বামেদের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি

মীনাক্ষী মুখার্জি
মীনাক্ষী মুখার্জি ফাইল ছবি -
Published on

নন্দীগ্রাম- এবারের বিধানসভা নির্বাচনে নিঃসন্দেহে সবথেকে হাইভোল্টেজ কেন্দ্র এই নন্দীগ্রাম।

তৃণমূলের হয়ে এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির হয়ে লড়ছেন তাঁরই একসময়কার ছায়াসঙ্গী শুভেন্দু অধিকারী।

এই দু'জন হেভিওয়েট প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধক্ষেত্রে স্বমহিমায় নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন বামেদের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি। নির্বাচনী দ্বিমুখী লড়াইকে কার্যত ত্রিমুখী পরিনত করেছেন তিনি।

একদিকে যখন তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থীরা নিজেদের নির্বাচনী প্রচারে মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে একে অপরের দিকে আঙুল তুলতে ব‍্যস্ত, তখন‌ বাড়ি বাড়ি প্রচারেই জোর দিয়েছেন বাম প্রার্থী মীনাক্ষী।

এবারের প্রার্থী তালিকায় তারুণ্যের ওপর জোর দিয়েছে বামেরা। হেভিওয়েট নেতার পাশাপাশি একধিক নতুন মুখও প্রার্থী তালিকায়। বামেরা মনে করছে- তাদের তরুণ মুখেরাই এবারের নির্বাচনে ফারাক গড়ে দেবে।

বৃদ্ধতন্ত্র নিয়ে ক্রমাগত সমালোচনার মুখে পড়া বামেদের এই সাহসী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। উজ্জীবিত পার্টি কর্মীরাও।

রেয়াপাড়া, গোপালপুর, ভেকুটিয়া, বাড়কান্ড পসরা থেকে শুরু করে রতনপুর, টাকাপুরা সর্বত্রই হেঁটে হেঁটে মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর প্রচারে উঠে আসছে বেকারত্ব, ফসলের ন্যায‍্য মূল্য না পাওয়া, দুর্নীতি ইত‍্যাদির কথা।

গত ১৯৫২ সাল থেকে এই আসনে প্রার্থী দিয়ে আসছে সিপিআই। গত ২০০৯ সালে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রথমবার জেতে তৃণমূল। সেই নির্বাচনের আগে সিপিআই বিধায়ক মহম্মদ ইলিয়াস এক স্টিং অপারেশান কাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন।

পরবর্তী সময়ে সেই স্টিং অপারেশান ভুয়ো বলে প্রমাণিত হয়। যে সাংবাদিক সেই স্টিং অপারেশন করেছিলেন তিনি পরবর্তী সময়ে তৃণমূলে যোগ দিলেও পরবর্তী সময়ে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।

খুব অল্প দিনেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন মীনাক্ষী। নন্দীগ্রামের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী মীনাক্ষীর হাতে আঁকা ছবি নিয়ে হাজির হয়েছে প্রচারের মাঝে।

হাতে আঁকা ছবি প্রিয় নেত্রীকে উপহার দিতে পেরে বেজায় খুশি খুদে ছাত্রী। বিশেষ করে মহিলাদের কাছে ক্রমেই ঘরের মেয়ে হয়ে উঠছেন মীনাক্ষী। যা তৃণমূল-বিজেপি শিবিরে যথেষ্ট চিন্তার বিষয়।

সংবাদমাধ্যমের সামনেও সমান সাবলীল মীনাক্ষী। বাংলা-হিন্দিতে তাঁর প্রাঞ্জল বক্তব্য নজর কেড়েছে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমেরও। একাদিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে রীতিমত তারকা মীনাক্ষী।

প্রচার চলাকালীন পুরানো পার্টি সদস্যদের বাড়িতে ঢুকে পড়ছেন। পুরানো সমর্থকরাও বেশ উজ্জীবিত প্রার্থীকে দেখে। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ছেন- সে দৃশ্যও ধরা পড়ছে ক্যামেরায়।

প্রচারের শেষে পার্টি কর্মীদের সাথেই খাওয়া দাওয়া সারছেন। প্রতিদিন হাঁটছেন প্রায় ২০ কিলোমিটার।

প্রচার শেষে কর্মীসভা। সেখানেও নজর কাড়ছেন এই লড়াকু নেত্রী। সেখানেই ঠিক করে নিচ্ছেন পরবর্তী কর্মসূচী।

নন্দীগ্রামের কোন প্রান্তেই প্রচারের সুযোগ ছাড়ছেন না মীনাক্ষী। বয়স্ক মানুষ দেখলেই ছুটে যাচ্ছেন আশির্বাদ নিতে।

নন্দীগ্রামের সিদ্ধেশ্বরী বাজারেও জোর কদমে প্রচার চলছে তাঁর। প্রতিটি দোকানে দোকানে যাচ্ছেন। বয়স্কদের দেখলেই পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করছেন। প্রার্থীর ব্যবহারে আপ্লুত অনেকেই।

সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় পার্টি কর্মী, সদস্যদের আশ্বস্ত করছেন। প্রার্থীকে দেখে মনের কথা খুলে বলছেন অনেকেই।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in