আমাদেরকে সবাইকে একসঙ্গে লড়তে হবে। তৃণমূল বিজেপিকে পরাস্ত করতে হবে। আমরা মহিলারা লড়াই করেছিলাম। আমাদের ওপর পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। আমাদের কমরেডদের কী অপরাধ ছিলো?
জোটবদ্ধ ভাবে বিজেপি তৃণমূলের প্রতিরোধ করতে হবে। আমাদের গ্রাম পাড়ায় এলাকায় একদম কোনো ফুল ফুটতে দেওয়া যাবেনা। আমরা রক্ত দেব কিন্তু মাথা নত করবো না। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমরা লড়াই করবো।
ব্রিগেডে মহম্মদ সেলিম বলেন -
বসন্ত এসে গেছে। পলাশ, কৃষ্ণচূড়া শিমুলদের আর কেউ আটকাতে পারবেনা। মৈদুলকে খুন করে পার পাবে না। সইফুদ্দিনকে সুদীপ্তকে খুন করেছো। গত ১০ বছরে ২৫০ কমরেডকে খুন করেও লাল ঝান্ডাকে শেষ করতে পারোনি।
ব্রিগেডে আসতে গেলে চার্টার্ড প্লেন লাগে না। কাল লড়ে থে গোরো সে, আজ লড়েঙ্গে চোরো সে। আমি এর সঙ্গে একটাই কথা যোগ করতে চাই। কাল ভি হাম জিতে থে, আজ ভি হাম জিতেঙ্গে।
আমরা এখানে ব্রিগেড করতে আসিনি। এবার ওঁদের মাঠ থেকে নক আউট করে দিতে হবে। আমরা হচ্ছি শিল্প গড়ার জন্য। আর ওঁরা আছে কারখানা বেচার জন্য। গত ১০ বছরে রাজ্যে তৃণমূল কোনো শিল্প করেনি। আর গত ৭ বছরে দেশে বিজেপি কোনো শিল্প করেনি।
আমরা দলবদলের লড়াই-এর বিরুদ্ধে দিন বদলের লড়াই করছি। বসন্ত যখন এসেছে তখন তৃণমূলের বাসায় রাখা ডিমগুলো এখন বিজেপির ঘরে গেছে। ওঁরা যখন বিভাজনের নীতি নিয়ে মানুষের ঐক্য ভেঙেছে আমরা তখন তা জুড়তে চেষ্টা করেছি।
গোটা দেশকে ওঁরা ভাগ করতে চেয়েছে। কৃষকরা যখন এককাট্টা হয়ে লড়াই করেছে তখন বিজেপি বলেছে ওঁরা খালিস্তানি। শাহিনবাগের সময় ওরাই বলেছে গোলি মারো শালো কো। আর অমিত শাহ-র দিল্লি পুলিশ, অপরাধীদের পাহারা দিলো। এই ঐশী ঘোষের মাথা ফাটিয়েছিলো যারা তাদের এখনও খুঁজে পায়নি দিল্লি পুলিশ। নন্দীগ্রামে যে আমাদের কমরেডদের খুন করলো তাকে পাশে বসিয়ে মোদী বলছেন উনি হিংসার বিরুদ্ধে লড়বেন। আরে মাল তো সব পুরানা হ্যাঁয়। শুধু শোরুমটা পাল্টেছে।
কিছু সংবাদমাধ্যম বলেছিল ২১-এর নির্বাচনে দুই পক্ষ। আমরা বলেছিলাম সবুর করো। লকডাউনের সময় আমরাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। যখন অনাহারে মানুষ ছিলো আমরা খাদ্যের দাবি করেছিলাম।
রাজ্যের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই তোলাবাজ, কাটমানির বাঙলার বিরুদ্ধে। এই রাজ্যে সংখ্যালঘু, আদিবাসীরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। এই বিজেপি আর তৃণমূল ভোটের সময় নানা ভিক্ষা দিতে চায়। আমরা ভিক্ষা চাই না। হক চাই। অধিকার চাই। আর এই হকের লড়াইতে যারা শিরদাঁড়া সোজা রাখতে পারবে তাদের সবাইকে স্বাগত।
এই কৃষকসভাই বলেছিল লাঙল যার জমি তার। আর মোদী শাহ বলে টাকা যার জমি তার। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। তৃণমূলকে মনে রাখতে হবে শুধু নীল সাদা রঙ করে দিলেই উন্নয়ন হয় না।
পরিষ্কার কথা। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হবে। একসাথে লড়তে হবে। আমাদের সরকার এলে বছরে বছরে নিয়োগ হবে। আগের মত সমস্ত শূন্য পদ পূরণ হবে। আমরা ভয় পাই না। বুথের ভূত তাড়াতে হবে। প্রশাসনের ভূত তাড়াতে হবে। যত তাপ বাড়বে আইস্ক্রিমের মত তৃণমূল গলে যাচ্ছে। আমাদের শপথ নিতে হবে আমরা এমন তাপ বাড়াবো তৃণমূল গলে যাবে বিজেপি বাস্প হয়ে উড়ে যাবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে এই বাংলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলা, নেতাজী সুভাষচন্দ্রের বাংলা, নজরুল ইসলামের বাংলা। সেই বাঙলাকে এঁরা শেষ করে দিয়েছে। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
এই বাঙলার মানুষকে এতদিন প্রশাসন দেখিয়ে আটকে রাখা হয়েছিলো। কিন্তু এখন বাংলা হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর আটকে রাখা যাবে না। আমরা নতুন বাংলা তৈরি করবো। শিল্প তৈরি করবো। দেশের সংবিধান আমাদের যে অধিকার দিয়েছেন আমরা সেই অধিকার আদায় করে নেব।
অনেক হয়েছে আর না। পিছিয়ে পড়া দলিত, আদিবাসী, মুসলিমদের হক বুঝে নিতে হবে। সকলের হক আগামী দিনে আমরা বুঝে নেব।
মনে রাখবেন দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভোটের যে অধিকার আমার ভোটেরও সেই অধিকার। আজ বাঙলার মুখ্যমন্ত্রী ঘুমহারা হয়ে গেছেন।
অত্যন্ত আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই বাম কর্মী কংগ্রেস কর্মীদের। আমরা একজোট হয়ে আগামী দিনে নিজেদের অধিকার নিজেরা বুঝে নেব।
অধীর রঞ্জন চৌধুরী
আজকের সভা বলে দিচ্ছে এই বাঙলায় টিএমসি বিজেপি এই দুই অপশক্তি পরাস্ত হবে। ইয়ে তো স্রেফ ঝাঁকি হ্যায়, সরকার বদলনা বাকি হ্যায়। সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিকে জয়ী করতে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাস্ত করতে হবে। ব্রিগেডের মাঠে আজ নতুন রামধনু। যারা বলছেন এই বাঙলায় লড়াই হবে দুটো শক্তির মধ্যে তাদের বলতে চাই শোচকে বদলো - দিশা বদলো।
আমি আবার বলছি আমাদের একমাত্র লক্ষ্য এই বাঙলায় বিজেপিকে রুখে দেওয়া, টি এম সিকে রুখে দেওয়া। নতুন বাংলা গড়বার শপথ নিয়ে আমরা এই মোরচা গড়েছি। সারা বাঙলার অর্থনীতি সারা দেশের অর্থনীতি চুরমার হয়ে গেছে। নরেন্দ্র মোদী যখন বলেন কংগ্রেস মুক্ত ভারত চাই তখন দিদি বলেন বিরোধী শূন্য বাংলা চাই। আসলে দিদি আর মোদীর রাজনৈতিক ডি এন এ এক।
দেশের দিকে তাকান। যে ভারতবর্ষ গড়ে উঠেছিলো ভগত সিং ক্ষুদিরাম আসফাকুল্লার আত্মত্যাগে তৈরি। এই দেশ আজ নষ্ট হবার মুখে। দেশে যেভাবে তেলের দাম বাড়ছে তাতে আর কিছু বলার নেই। বাঙলার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তেলের দাম ১ টাকা কমালাম। আমরা বলছি আমাদের দয়া করতে হবেনা।
রাজ্যে যখন লক ডাউন চলছিলো তখন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী পরিযায়ী শ্রমিকদের দিকে তাকাননি। ওই ট্রেনকে করোনা এক্সপ্রেস নাম দিয়ে আপনি বাঙলার মানুষকে অপমান করেছেন। মানুষ সে কথা ভুলবে না।
এই সরকার মৈদুল ইসলামকে পিটিয়ে মেরে ফেললো। মৈদুল সকলের জন্য চাকরি চাইতে গেছিলো। মুখ্যমন্ত্রীর একবারও মনে হয়নি ওই পরিবারের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথা।
আগামী দিনে সংযুক্ত মোরচাকে শক্তিশালী করার অর্থ বাঙলাকে শক্তিশালী করা। এই লড়াই করার জন্য শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। বন্দেমাতরম, ইনক্লাব জিন্দাবাদ।
আর এস পি-র মনোজ ভট্টাচার্য বলেন -
প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার সুযোগ নেই, কোনো সাংবাদিক প্রশ্ন করতে পারেন না, কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলেই তাকে দেশদ্রোহী বলা হচ্ছে। মোদীর এই ফ্যাসিবাদের জনক আর এস এস। নাগপুর থেকে সরকার পরিচালনা হচ্ছে। আমরা যে ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলাম এই ভারত সেই ভারত নয়।
আমাদের লড়াই করতে হবে গ্রামে গ্রামে খেতে খামারে। আমরা এই লড়াই জিতবো। এত বড়ো ব্রিগেড দেখে আত্মতুস্টির কোনো জায়গা নেই। মোদী মমতা আমাদের আটকাতে পারবেনা। এর বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন ভাবে লড়তে হবে। কারণ আগামী দিন আরও জটিল হবে। বিকল্প সরকারের লক্ষ্যে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
সিপি আইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন -
যারা অনেক বাধা অতিক্রম করে এখানে এসেছেন তাদের অভিনন্দন জানাই। এত কিছুর মোকাবিলা করে যারা ময়দানে এসেছেন তাদের সেলাম।
আজকের এই ব্রিগেড সমাবেশের পর হয়তো কাগজে টিভিতে দেখবেন আবার একটা কিছু হয়েছে। এঁরা এসব করতে থাকবে। নিজেদের মধ্যে এ বলে আমাকে দেখ আর ও বলে আমাকে দেখ। কিন্তু আপনাদের দেখবার কেউ নেই। আমাদের যেতে হবে মানুষের কাছে আমাদের বিকল্প নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গে শ্রমিক কৃষক মেহনতি খেটে খাওয়া মানুষ সহ সমস্ত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তাঁরা কোন জাতের ধর্মের তা বিষয় নয়। আর আমরা দেখছি ওঁদের তরজা চলছে তখন। তরজার গান কিন্তু লিখে দিয়েছে অন্য লোকে। ৭০০ কোটি দেশের মানুষকে লুট করছে আর তরজা বানাচ্ছে যাতে শোষণ বঞ্চনা চাপা দেওয়া যায়।
আমরা একটা বিকল্প চাই। এ কী বলল ও কী বললো আমাদের তাতে কান দেবার দরকার নেই। আমরা কাজ চাই। যত শূন্য পদ আছে সমস্ত পদ এক বছরের মধ্যে পূরণ হবে এরকম একটা বিকল্প আমরা চাই। ১০০ দিনের কাজকে কেন্দ্রের সরকার ২০০ দিন না করলে লড়াই হবে। আমরা চাই তার পাশাপাশি মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা। আমরাই একসময় চালু করেছিলাম।
আমরা চাই সকলের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যের অধিকার। বড়ো শিল্প যা আসার সুযোগ আছে তা আনতে হবে। সমস্ত পশ্চাতপদ মানুষের উন্নয়ন চাই। কেন সকলে সমান সুযোগ পাবেনা।
সমস্ত শক্তি দিয়ে আমরা রাজ্যের বিপন্ন মানুষকে রক্ষার চেষ্টা করবো। নারী পুরুষের মধ্যে বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করবো।
যারা এখানে কষ্ট করে এসেছেন, এখনও সবাই আসতে পারেননি তাদের অভিনন্দন। এখানে আমরা বলছি আপনারা শুনছেন। আমাদের যা কথা নিয়ে যেতে হবে মানুষের কাছে। শুধু আমাদের কথা বলতে হবেনা। মানুষের কাছে যেতে হবে। তাঁরা যা পরামর্শ দেবেন সেই কথা শুনতে হবে। লড়াইটা শুধু ব্রিগেডের লড়াই না।
শেষ কথা হচ্ছে বুথে বুথে মানুষের ঐক্য। মানুষ মানে মানুষ। সব মানুষের কাছে আমাদের পৌঁছতে হবে। নিপীড়িত বঞ্চিত শোষিত মানুষের কাছে আমাদের পৌঁছতে হবে। আপনারা সবাই আমাদের সঙ্গে আছেন থাকবেন এবং আরও বহু মানুষকে নিয়ে আসবেন এই বিশ্বাস রাখি।
এদিন সভা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় বর্ষীয়ান সিপিআই(এম) নেতা ও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে। নিজের বক্তব্যে তিনি বলেন এই সমাবেশ অভূতপূর্ব। এই সমাবেশে বামপন্থীরা আছে, জাতীয় কংগ্রেস আছে, আই এস এফ আছে, বাম সহযোগী অন্যান্য দল আছে। এইরক্মের সমাবেশ অতীতে ব্রিগেডে কখনও দেখেনি। যা আজ দেখছে।
তিনি আরও বলেন, যেভাবে তৃণমূল বিজেপির তরজা চলছে, যেভাবে মানুষের মন বিষয়ে দেওয়া হচ্ছে, মানুষের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা হচ্ছে আজকের বক্তারা তার বিরুদ্ধে কথা বলবেন।
এদিন বিমান বসু বলেন, যারা বলেন দূরবীন দিয়ে দেখতে হয় বলে থাকেন, আমরা বলবো এখনই একবার খবর নিয়ে দেখে নিন। কত মানুষ এসেছেন আর কত মানুষ আসবেন। আমি সবাইকে অভিনন্দন জানাই। সভার পর সকলে সাবধানে ফেরত যাবেন।
ইতিমধ্যেই কলকাতা শহরের অধিকাংশ অঞ্চল ব্রিগেডমুখী মানুষের দখলে। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে একের পর এক মিছিল ব্রিগেডের দিকে আসছে। ব্রিগেডেও পৌঁছে গেছেন বহু মানুষ। কিছুক্ষণ আগেই ব্রিগেড মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয় যে - দিল্লি রোড বম্বে রোডে ইচ্ছাকৃত যানজট সৃষ্টি করে বহু ব্রিগেড মুখী গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছে। যদিও পরে জানানো হয় আপাতত যানজটের মুক্তির পর সেইসব গাড়ি ফের ব্রিগেড অভিমুখে রওনা দিয়েছে।
নবান্ন অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ স্বামী। ১৮ দিন কেটে গেলেও এখনও কোনো খোঁজ নেই পূর্ব মেদিনীপুরের নিখোঁজ DYFI কর্মী দীপক পাঁজার। তারপরও লাল ঝান্ডাকে ছাড়েনি তাঁর স্ত্রী সরস্বতী পাঁজা। আজ ব্রিগেডের উদ্দেশ্যে দীপকের স্ত্রী ও তাঁর আত্মীয়রা।
কিছুক্ষণ আগেই সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্রিগেড সমাবেশের প্রাথমিক কাজ। মূল সভার কাজ ১টার সময় শুরু হবার কথা থাকলেও এখনই ব্রিগেডে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। শহরের বিভিন্ন রাস্তা এখনই ব্রিগেডমুখী মানুষের দখলে চলে গেছে।
শুরু হয়ে গেছে বাম কংগ্রেস আই এস এফ-এর ব্রিগেড সমাবেশের প্রাথমিক কাজ। এই মুহূর্তে বিভিন্ন গোষ্ঠী একের পর এক সঙ্গীত পরিবেশন করছে। শপথ নিচ্ছে ভাঙা বুকের পাঁজর দিয়ে নতুন বাংলা গড়ার।
উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে। বেশ কিছু মানুষ আসতে শুরু করে দিয়েছেন। আজ ব্রিগেডে তিলধারনের জায়গা থাকবে না। এমনকি রাস্তাতেও জায়গা থাকবে না। রবিবার ব্রিগেড সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের একথা জানালেন বিশিষ্ট নাট্য পরিচালক চন্দন সেন।
তিনি আরও বলেন - এই ব্রিগেড থেকে সারা ভারতকে একটা সোজা কথা জানাতে হবে যে এই দিন আর চলবে না। এই দিন শেষ। এই স্বৈরাচার, এই ফ্যাসিজম আর চলবে না। একে প্রতিহত করতে হবে। মানুষ তৈরি হয়ে গেছে।
ডানকুনির আগে হাইরোডে বিশাল যানজটে আটকে আছে ব্রিগেডমুখী বহু যানবাহন। দীর্ঘক্ষণ ধরে আটকে থাকায় বিভিন্ন যানবাহন থেকে ব্রিগেডমুখী যাত্রীরা রাস্তায় নেমে পড়েন। বাম কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ ইচ্ছাকৃতভাবে যানজটের সৃষ্টি করে ব্রিগেডমুখী যান আটকে রাখা হয়েছে।
ঘড়ির হিসেবে ব্রিগেডের সমাবেশ শুরু হতে এখনও তিন ঘণ্টা বাকি। যদিও এখনই ব্রিগেডের মাঠে ভিড় জমাতে শুরু করে দিয়েছেন উৎসাহী বাম কর্মী সমর্থকরা। গতকালও প্রায় সারা রাত ধরেই শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে ভিড় লেগেছিলো ব্রিগেড আগত বাম কর্মীদের। গতকাল গভীর রাতেও শহর কলকাতার বুকে বাম কর্মীদের ব্রিগেডমুখী মিছিল দেখা গেছে।
পার্ক স্ট্রীটের দিক থেকে ব্রিগেডে ঢোকার পথের মুখে অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি হয়েছে। সেখানেই বন্দোবস্ত করা হয়েছিলো খাবারের। যারা আগেই এসে গেছেন তাদের জন্য বাম সংগঠনের তরফে করা হয়েছিলো থাকার ব্যবস্থায়।
গতকালই ব্রিগেডের কাজকর্ম দেখতে বিকেলের দিকে মাঠে আসেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তীরা। এছাড়াও মাঠেই ছিলেন প্রথম সারির বাম নেতৃত্ব। গতকালই বিমান বসু সাংবাদিকদের জানান বামেরাই সংগঠিত ভাবে সাড়ে সাত লক্ষ মানুষের জমায়েত করবে। এছাড়াও বিভিন্ন সহযোগী দল, কংগ্রেস, আইএসএফ-এর সমর্থকরাও ব্রিগেডে আসবেন। কাজেই এবারের ব্রিগেডে কত মানুষ আসবেন তা এখনই বলা যাবেনা। তবে এটুকু বলতে পারেই এবারের ব্রিগেড অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দেবে।
আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পর বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ। এই সমাবেশে বামেদের সাথে থাকছে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ। গতকাল রাত থেকেই মহানগরের রাস্তায় মানুষের ঢল নেমেছে। গন্তব্য ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড। ইতিমধ্যেই নির্বাচন ঘোষিত হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই নতুন মাত্রা পেয়েছে এবারের ব্রিগেড সমাবেশ। এই ব্রিগেড সমাবেশ থেকেই কার্যত নির্বাচনী প্রচার শুরু হতে চলেছে রাজ্যে।
বাম-কংগ্রেস-আইএসএফের এই যৌথ সমাবেশে বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকছেন সীতারাম ইয়েচুরি, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, অধীর চৌধুরী, আব্বাস সিদ্দিকি, স্বপন ব্যানার্জি, নরেন চ্যাটার্জি, মনোজ ভট্টাচার্য, ভূপেশ বাঘেল।
আজ কলকাতার বুকে মূল আটটি মিছিল ব্রিগেড ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। এগুলো শুরু হবে - টালিগঞ্জ, গোলপার্ক, শ্যামবাজার, পদ্মপুকুর, খিদিরপুর, ফুলবাগান, ভিক্টোরিয়া হাউস, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে। মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং উঃ ২৪ পরগণা জেলা থেকে আসা বাম কর্মী-সমর্থকরা শিয়ালদহ থেকে এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার কর্মীরা পার্ক সার্কাস থেকে মিছিল করে ব্রিগেড আসবে। এছাড়াও হাওড়া থেকে একটি মিছিল যাবে। যে মিছিলে আসার কথা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, হাওড়ার মানুষজনরা। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর দাবি, আজকের সমাবেশ ঐতিহাসিক হতে চলেছে।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।