
ব্ল্যাকমেলের শিকার হতে হয়েছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এরকমই একটি ভিডিও ভাইরাল হতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দলের অন্দরে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মনে। ঘটনাটি কী? তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল প্রার্থী করা নিয়ে ব্ল্যাকমেল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তাই নলহাটির বিদায়ী বিধায়ক মইনুদ্দিন শামসকে তিনি প্রার্থী করতে পারেননি। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে মমতা একথা বলছেন, এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
স্বাভাবিকভাবেই ভোট মরসুমে এই ভিডিও তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে এনে ফেলেছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পরিস্থিতি সামলাতে সাফাই গেয়েছেন ফিরহাদ, দলে গণতন্ত্র থাকাতেই তিনি এই কথা বলতে পেরেছেন। বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিরহাদ লেখেন, ‘আমার তৃণমূল কংগ্রেস এমন একটি দল, যেখানে ক্ষুদ্রতম কর্মীর বক্তব্যেরও দাম আছে। তাই যখন আমি বলেছি যে, অভ্যন্তরীণ চাপের কারণে কোনও প্রার্থীকে টিকিট দেওয়া হয়নি, তা আসলে দলের বিশুদ্ধতার চিহ্ন এবং আমার নেত্রীর স্বার্থবিরোধী স্বভাব।'
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার কলকাতা বন্দর বিধানসভা এলাকায় কর্মী সম্মেলন করেন ফিরহাদ। তাঁর পাশেই ছিলেন মইনুদ্দিনের ভাই তৃণমূল কাউন্সিলর নিজামুদ্দিন শামস। তখন ফিরহাদ মইনুদ্দিনকে টিকিট না-দেওয়ার প্রসঙ্গটি তোলেন। তাঁর বক্তব্য নিজামুদ্দিনের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ‘লাইভ’ করা হয়। ভিডিওয় ফিরহাদ বলেন, ‘কেন আমরা মইনুদ্দিনের টিকিট কাটব? যখন প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হচ্ছিল, তখন আমি দিদির (মমতা) পাশেই বসেছিলাম। আমারও জানা ছিল না, ওঁর নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। যখন ওঁর নাম তালিকায় প্রকাশ পেল না, তখন আমি মমতা ব্যানার্জিকে জিজ্ঞাসা করলাম। উনি বললেন, অনুব্রত আমাকে ব্ল্যাকমেল করায় ওঁকে টিকিট দেওয়া যায়নি। জবরদস্তি অন্যের নাম দিয়ে ওর নাম কেটে দিয়েছে। আমি কী করব?’
পাশাপাশি ভিডিওয় ফিরহাদকে মমতা বলেন, ‘আমাকে সবাইকে রাখতে হয়। সবাইকে সামাল দিতে হয়। উনি টিকিট না পাওয়ায় আমিও ব্যথিত হয়েছি। পরদিনই আমি নিজামভাইকে বলেছি। একজন ভালো মানুষ। কখনও কোনও ঝামেলায় থাকেন না। চুপচাপ নিজের কাজ করেন। কিন্তু এতকিছু করেও তিনি টিকিট পাননি। কোনও নেতা এসব কথা বলবে না। কিন্তু আমি বোকা। এসব কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করছি।’
মইনুদ্দিনের বদলে এবার নলহাটিতে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ। ক্ষুব্ধ মইনুদ্দিন ওই আসনে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন। যা তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। তৃণমূলের অন্দরের মতে, অনুব্রত মণ্ডলের মতো নেতার চাপের কাছে মুখ্যমন্ত্রী নতিস্বীকার করেছেন, এমন বার্তা ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন