UCL: বার্নাব্যুতে 'কামব্যাক'-এর অবিশ্বাস্য গল্প লিখলো রিয়াল মাদ্রিদ, নেপথ্যে নায়ক রদ্রিগো

রদ্রিগোর জোড়া গোল এবং বেনজেমার পেনাল্টিতে ঘরের মাঠে সফরকারী সিটিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ৬-৫ অ্যাগ্রিগেটে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।
রিয়াল মাদ্রিদ
রিয়াল মাদ্রিদছবি সৌজন্যে রিয়াল মাদ্রিদ ট্যুইটার হ্যান্ডেল

এভাবেও ফিরে আসা যায়! সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে কামব্যাকের অবিশ্বাস্য এক গল্প লিখলো রিয়াল মাদ্রিদ। আর তার নেপথ্যে নায়ক ২১ বর্ষীয় ব্রাজিলিয়ান তরুণ ফরোয়ার্ড রদ্রিগো। রদ্রিগোর জোড়া গোল এবং বেনজেমার পেনাল্টিতে ঘরের মাঠে সফরকারী সিটিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ৬-৫ অ্যাগ্রিগেটে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। প্রথম ম্যানেজার হিসেবে পাঁচটি চ্যাম্পিয়নস লীগ ফাইনালে জায়গা করে নিলেন কার্লো আনচেলত্তি। ফাইনালে আনচেলত্তির দলের প্রতিপক্ষ য়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল।

গত সপ্তাহে সেমিফাইনালে রোলারকোস্টার প্রথম লেগের ফলাফল ছিল সিটির পক্ষে ৪-৩। বার্নাব্যুতে দ্বিতীয় লেগে এসে ৭৩ মিনিটের মাথায় রিয়াদ মাহরেজের গোলে এগিয়ে যায় সিটি। গার্দিওলাদের পক্ষে অ্যাগ্রিগেট দাঁড়ায় ৫-৩। এরপর ম্যাচের বয়স বাড়লেও রিয়াল পাচ্ছিলো না গোলের দেখা। হতাশা গ্রাস করেছিলো রিয়াল সমর্থকদের মধ্যে। তবে হাল ছেড়ে দেয়নি রিয়াল। ম্যান সিটি যখন নিশ্চিত জয় ভেবেই উৎসবের পরিকল্পনা করছে, তখনই নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে - ৯০ মিনিটের মাথায় গোল করেন রদ্রিগো। এই গোলের ঠিক এক মিনিট বাদেই অবিশ্বাস্য ভাবে দ্বিতীয় গোলটি করে রিয়ালকে সমতা এনে দেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। সমতা ফিরে পাওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে বেনজেমার পেনাল্টিতে চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে প্রবেশ করে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।

শুরু থেকে দুই দলই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে। প্রথমার্ধে মূল লড়াই হয় মাদ্রিদের লেফট উইংয়ে। ভিনিসিয়াস বনাম কাইল ওয়াকার যুদ্ধে প্রথমার্ধে জয়ী হন ওয়াকারই। চারবার চেষ্টা করলেও একবারও ওয়াকারকে পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারেননি ভিনি। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে ওয়াকার চোট পেয়ে উঠে গেলে আক্রমণের বড় সুযোগ পায় রিয়াল। তবে বার্নার্ডো সিলভা এদিন সিটির হয়ে মাঝ মাঠে আলো ছড়াতে থাকেন। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের মধ্যেই ৭৩ মিনিটে সিলভা মাঝ মাঠ থেকে দুরন্ত ভাবে বল নিয়ে ওঠেন। পাস বাড়ান রিয়াদ মাহরেজকে। মাহরেজের বুলেট গতির শটের কোনো জবাব ছিলোনা কার্তোয়ার সামনে।

রিয়ালের হয়ে তেকাঠির নীচে গতরাতে অসম্ভব কিছু সেভ করে দলকে আরও পিছিয়ে পড়া থেকে আটকান থিবো কার্তোয়া। প্রথম গোলটি করার পর খেলায় নিয়ন্ত্রণও নিয়ে ফেলে সিটি। ম্যাচের বাকি তখন ১৭ মিনিট। অ্যাগ্রিগেটে দুই গোলে এগিয়ে যাওয়া সিটি যে প্যারিসে যাচ্ছে, তা মেনে নিতে শুরু করেছে অনেক মাদ্রিদ সমর্থকও। গ্রিলিস, ক্যান্সেলোরা বারবার পরীক্ষা নিতে থাকে রিয়ালের রক্ষণের। কিন্তু এরপর যা হল তা কার্যত কল্পনাও করতে পারেননি রিয়াল ও সিটি দুই দলের সমর্থকরা।

৬০ মিনিটে টনি ক্রুজের বদলি হিসেবে রদ্রিগোকে নামিয়েছিলেন আনচেলত্তি। সেই রদ্রিগোই প্রাণ ফিরিয়ে আনলো বার্নাব্যুতে। ৯০তম মিনিটে বক্সের ভেতর নেওয়া কামাভিঙ্গার ক্রস হালকা করে কাটব্যাক করেন বেনজেমা। তাতে শট নিয়ে হঠাৎ করেই গোল করেন রদ্রিগো। তার ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে আরেকটি গোল করে বসে মাদ্রিদ। এবার কারবাহালের নেওয়া শটে হেড করে গোল করেন সেই রদ্রিগোই। সমস্ত বার্নাব্যু যেনো ফেটে পড়ে উচ্ছ্বাসে। করতে থাকে রদ্রিগো বন্দনা।

অ্যাগ্রিগেট ৫-৫ থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটেই বেনজেমাকে বক্সের ভেতর মিস-ট্যাকেল করে ফেলে দেন রুবেন ডিয়াজ। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি বেনজেমা। এরই মাধ্যমে এবারের আসরে ফরাসী স্ট্রাইকারের গোলসংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১৫-তে। অতিরিক্ত সময়ের বাকি সময়ে সিটি অনেক চেষ্টা করলেও দ্বিতীয় গোলের দেখা আর পায়নি। ৩-১ ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in