মাউন্ট এভারেস্ট ও লোৎসেতে পরপর সামিট ,নেপালে লক্ষাধিক টাকার ঋণের বোঝায় চিন্তিত বঙ্গতনয়া

কাঠমান্ডুতে থাকতে থাকতে বকেয়া ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে পিয়ালিকে। শেরপা ও এজেন্সির প্রয়োজনীয় টাকা মেটাতে হবে তাঁকে। আর এই টাকা দিতে না পারলে শংসাপত্র পাবেন না পিয়ালি।
পর্বতকন্যা পিয়ালি বসাক
পর্বতকন্যা পিয়ালি বসাকছবি সংগৃহীত
Published on

বিশ্বের প্রথম ও চতুর্থ পর্বতশৃঙ্গে পরপর আরোহণ করলেন বঙ্গসন্তান পিয়ালি বসাক। চন্দননগরের মেয়ে পিয়ালি, প্রথমে আরোহণ করেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট (৮৮৪৮ মি.)। এভারেস্ট জয়ের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বিশ্বের চতুর্থশৃঙ্গ (৮৫১৬ মি.) লোৎসে সামিট করে নজির সৃষ্টি করলেন এই বাঙালি কন্যাসন্তান। ২৫ মে অর্থাৎ আজ বিকেলে বেস ক্যাম্পে ফেরার কথা পিয়ালির।

একসাথে এভারেস্ট ও লোৎসে এই দুটি পর্বতশৃঙ্গে আরোহণের উদ্দেশ্যে অভিযান শুরু হয় পিয়ালির। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অক্সিজেন ব্যবহার না করে এভারেস্ট-লোৎসে পর্বতচূড়া জোড়া আরোহণ করারই ছিল পিয়ালির লক্ষ্য। এভারেস্টের চূড়ায় প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিলেন পিয়ালি। জানা গেছে, শীর্ষে ওঠার মাত্র ৪০০ মিটার আগে বাধ্য হয়ে অক্সিজেন ব্যবহার করতে হয়েছিল তাঁকে। ৮,৮৪৮ মিটার উচ্চতার শৃঙ্গে আরোহণের ধকল অনেকটাই। সেই ধকল কাটিয়ে উঠেই লোৎসে আরোহণ করে নজির সৃষ্টি করলেন এই বঙ্গতনয়া। ইতিপূর্বে, ২০২১-এর অক্টোবরে অক্সিজেন ছাড়াই নেপালের ধৌলাগিড়ি আরোহণ করেছেন পিয়ালি।

পিয়ালির সাফল্যে খুশি তাঁর বন্ধু-পরিবার-আত্মীয়রা। কিন্তু সাথে আর্থিক অনিশ্চয়তাও মাথাচাড়া দিয়েছে পিয়ালির মধ্যবিত্ত পরিবারে। পিয়ালির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই পিয়ালির এই পাহাড় চড়ার নেশা ছিল। মাত্র ৬বছর বয়সে প্রথমবার পাহাড়ের বুকে দাঁড়িয়ে পিয়ালির এই ইচ্ছাপ্রকাশ পায়। এরপর পিয়ালি তাঁর এই ইচ্ছেকে আর কখনও ছাড়েননি।

পরিবারের দাবী, কোনো আর্থিক বাধা পিয়ালির পাহাড়ে ওঠার নেশাকে দমাতে পারেনি। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে পিয়ালির স্বপ্ন কখনও তার থেকে দূরে যায়নি। বন্ধু, পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদের থেকে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে টাকা তুলে রওনা দেয় পিয়ালি।

পায়োনিয়ারস্ নামের এজন্সি সংস্থা আয়োজন করেছিল পিয়ালির এই গোটা অভিযানটি। সম্পূর্ণ অভিযানে খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা। সেই টাকার মধ্যে ২২ লক্ষ টাকা এখনও পর্যন্ত উঠেছে, বাকি আছে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। এই বকেয়া টাকা নিয়ে চিন্তিত পিয়ালির পরিবারও। সামিট তো করেছেন পিয়ালি, কিন্তু বকেয়া টাকা পরিশোধ না করলে শংসাপত্র পাবেন না তিনি। তাই মেয়ের এই জয়ে তাঁর পরিবার খুশি কিন্তু আবার একই সাথে চিন্তিত।

পিয়ালি এখন নেপালের বেস-ক্যাম্পে আছেন। গত ১২মে পিয়ালি বসাকের বোন তমালী বসাক ফেসবুকে পোস্ট করে সাধারণ মানুষের কাছে এভারেস্ট অভিযানের জন্য অর্থের আবেদন করেন। পিয়ালির মা স্বপ্না বসাক আক্ষেপ করে বলেছেন, মেয়ে কাঠমান্ডুতে থাকতে থাকতে বকেয়া ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। শেরপা ও এজেন্সির প্রয়োজনীয় টাকা মেটাতে হবে পিয়ালিকে। আর এই টাকা দিতে না পারলে শংসাপত্র পাবে না পিয়ালি। তিনি আরও বলেছেন, পিয়ালি রাজ্য তথা দেশের গর্ব। কেন্দ্র বা রাজ্যের তরফে আর্থিক সাহায্যের আর্জিও জানিয়েছেন পিয়ালির পরিবার।

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in