
ভারতীয় ক্রিকেটে তো বটেই বিশ্ব ক্রিকেটেও মিতালী রাজ অন্যতম কিংবদন্তি। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই অত্যন্ত সফল তিনি। দীর্ঘ সময়ের জন্য ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের অধিনায়ক ছিলেন মিতালী। সেই মিতালীকেও কেরিয়ারের মধ্যগগনে পৌঁছে আর পাঁচটা মেয়ের মতোই শুনতে হয়েছিল বিয়ের পর ক্রিকেটের পাঠ চুকিয়ে মন দিয়ে সংসার সামলানো আর বাচ্চা মানুষ করতে হবে।
সম্প্রতি মিতালী রাজ এসেছিলেন ইউটিউবার রণবীর আলাবাদিয়ার পডকাস্ট অনুষ্ঠানে। সেই অনুষ্ঠানে মিতালী বলেন, ‘আমি সত্যিই কিছু কথার কোনও মানে খুঁজে পাই না। আমার মাসি কয়েকটা পাত্র দেখেছিলেন। আমায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হয়। আমি রাজি হয়েছিলাম। কিছুক্ষণ কথা বলার পরই সবাই সোজা বিয়ে পরবর্তী চিন্তাভাবনায় চলে যেতেন। কতগুলো বাচ্চা নেব এই সব প্রশ্ন করতেন। আমি এসব কথায় একটু পিছিয়েই পড়তাম। আমি তখনও দেশের ক্রিকেটের কথাই ভাবতাম। তখনও আমায় বলা হত যে ক্রিকেট ছেড়ে দিতে হবে।‘
মিতালী তখন ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। তাঁকে দেখতে এসেছিল পাত্রপক্ষ। তিনি বলেন, ‘আমি সেই সময় ভারতীয় দলের অধিনায়ক। এক পাত্র আমায় বলল, বিয়ের পর তোমায় খেলা ছেড়ে দিতে হবে। বাচ্চাদের দেখাশোনা করতে হবে। আমি তখনও ওর কথাগুলো শুনে নিচ্ছিলাম। এরপর হঠাৎই জিজ্ঞাসা করল, ওঁর মায়ের কিছু হলে আমি ক্রিকেট খেলব না তাঁকে দেখব? আমি পাল্টা বললাম, এটা কি ধরণের প্রশ্ন? তখন সে বলল, আমি দেখতে চাই তোমার কাছে কে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এরপর আমি বললাম যে পরিস্থিতির ওপর সব নির্ভর করছে। আমি ছেলেটার নাম জানিনা, তবে বিষয়টা আমায় খুব বিরক্ত করেছিল।‘
মিতালী জানান, তাঁর বন্ধুরাও তাঁকে বলত পার্টনারের বিষয় মানিয়ে নিতে হবে। মিতালীর কথায়, ‘আমার মনে আছে, আমার একজন ক্রিকেটার বন্ধু আমায় বলেছিল কিছু বিষয় মানিয়ে নিতে হবে। কারণ কেউ আমায় আমার বর্তমান লাইফস্টাইল অনুযায়ী থাকতে দেবে না। আমি ওকে বলেছিলাম, এসব প্রশ্নের কোনও মানেই নেই। কিন্তু ও বলেছিল, অনেক ছেলেরাই এরকম প্রশ্ন করে। তখনও আমি ছেলেটির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। পরে আমি ভাবলাম আমার মা-বাবা এত কষ্ট করে আমার কেরিয়ার বানিয়েছেন, এত কিছু ত্যাগ করেছেন। তাই কোনও অচেনা অজানা লোকের জন্য এভাবে আমি আমার ক্রিকেট বা কেরিয়ারকে ত্যাগ করতে পারব না।‘
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন