WB: জাতীয় স্তরে রেকর্ড করে স্বর্ণপদক জয়ী অ্যাথলিট এখন পেটের টানে পরিযায়ী শ্রমিক

মরচে ধরা ট্রাঙ্ক খুলতেই বেরিয়ে এল একগুচ্ছ জং-ধরা মেডেল আর স্যাঁতসেঁতে একগাদা শংসাপত্র। সবই জাতীয় স্তরের। মেডেলগুলির মধ্যে চারটি সোনার। রিঙ্কু বর্মনের আক্ষেপ - ‘‘সোনার মূল্য কে দেবে!’’
রিঙ্কু বর্মন
রিঙ্কু বর্মননিজস্ব চিত্র
Published on

পেটের টানে জাতীয় স্তরে রেকর্ড করা দক্ষিন দিনাজপুরের স্বর্নপদক প্রাপ্ত রিঙ্কু বর্মন এখন পরিযায়ী শ্রমিক। জাতীয় রেকর্ড গড়লেও খোঁজ নেয়নি কেউ। অথচ সদ্য সমাপ্ত অলিম্পিক খেলে অনান্য রাজ্যের পদক জয়ীরা অধিকাংশই গ্রামীন স্তর থেকে উঠে আসলেও তাদের নিজেদের গড়ে পিটে ওঠার ক্ষেত্রে সেই সব রাজ্য সরকারের বিরাট অবদান রয়েছে।

অথচ দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ব্লকের অশোকগ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব বিষ্ণুপুরের বছর ছাব্বিশের রিঙ্কু বর্মন ছোট থেকেই খেলাধুলোয় পারদর্শী ছিলেন। করোনা ভাইরাস ফুসফুসে আক্রমণ করে। কিন্তু ফুসফুস নয়, পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ওঠা রিঙ্কু বর্মন চিন্তিত খালি পেট নিয়ে। একমুঠো ভাতের জন্য করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে আজ সব পদক ফেলে ছুটতে হচ্ছে ভিন রাজ্য গুজরাতে।

নিজস্ব চিত্র

মরচে ধরা ট্রাঙ্ক খুলতেই বেরিয়ে এল একগুচ্ছ জং-ধরা মেডেল আর স্যাঁতসেঁতে একগাদা শংসাপত্র। সবই জাতীয় স্তরের। মেডেলগুলির মধ্যে চারটি সোনার। সেগুলো জড়ো করে ধরে আক্ষেপ রিঙ্কু বর্মনের, ‘‘সোনার মূল্য কে দেবে!’’ রিঙ্কু বর্মনের বাবা বেঁচে নেই, বোন আছে সে তাকে সাহায্য করে। মা আছেন, সে অন্যের জমিতে কাজ করে কোনমতে দিন গুজরান হয় তাদের। নিজের জমি বিক্রি করতে হয়েছে অভাব এর জন্য।

যেহেতু রিঙ্কু বর্মন তার খেলাধুলোর ব্যাপারটা শিলিগুড়ি থেকে করেছিল। এদিকে জেলা ক্রিড়া সংস্থ্যার কাছে রিঙ্কু বর্মনের কোন রেকর্ড না থাকার দরুন তার বিষয়ে কোন খবরও জেলা ক্রিড়া সংস্থার কাছে নেই। যদি থাকত তবে জেলা ক্রিড়া সংস্থা নিশ্চই এমন একজন কৃতি খেলোয়াডের জন্য কিছু করে দেখাত বলে জেলা ক্রিড়া সংস্থ্যার তরফে জানানো হয়েছে।

নিজস্ব চিত্র

হরিয়ানায় ২০০৯ সালে ন্যাশনাল ইন্টার জ়োনাল জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের অনূর্ধ্ব ১৬ বিভাগে ১ হাজার মিটার রিলে রেস ২ মিনিট ১.৪৯ সেকেন্ডে শেষ করে নতুন মিট রেকর্ড গড়েছিলেন অ্যাথলিট রিঙ্কু।

তার আগে পরেও জাতীয় সাফল্য রয়েছে আরও। কিন্তু সেই সোনার ছেলেই এখন আর্থিক অনটনে পরিযায়ী শ্রমিক হয়েছেন। পাশে দাঁড়াননি কেউ। খোঁজও নেননি। সাড়ে তিনশো টাকা দৈনিক রোজগারে সুদূর গুজরাতের সুরাতে এম্ব্রয়ডারির কাজ করেন তিনি। খেলাধুলো ছাড়তে হয়েছে বেশ কয়েক বছর হল।

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in