
ভারত ২০৩৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্স আয়োজনের জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে চাইছে। সেই কারণেই গুজরাটের প্রায় ৬৫০ একর জমি অধিগ্রহণের উপর জোর দিয়েছে সরকার। এই জমির মধ্যে রয়েছে ধর্ষণে অভিযুক্ত আশারাম বাপুর আশ্রম। এছাড়া আরও দুটি আশ্রমের জমিও অধিগ্রহণের তালিকায় রয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভূপেন্দ্র প্যাটেলের নেতৃত্বাধীন গুজরাট সরকার আমেদাবাদে ৬৫০ একর জমিতে অলিম্পিক্স ভিলেজ এবং অন্যান্য ক্রীড়া সুবিধার জন্য একাধিক কাজ শুরু করার উদ্যোগ নিচ্ছে। যার কারণে ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আশারাম বাপুর আশ্রমের জমিও প্রয়োজন সরকারের।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৩৬ সালের অলিম্পিকের জন্য অ্যাথলিটদের সমস্ত রকম সুবিধা প্রদানের জন্য আশ্রমের জমিগুলি অধিগ্রহণ করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে আশারাম বাপুর আশ্রমের জমি ছাড়াও ভারতীয় সেবা সমাজ এবং সদাশিব প্রজ্ঞা মণ্ডল আশ্রমের জমি রয়েছে। মোতেরার নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের কাছে সর্দার প্যাটেল স্পোর্টস এনক্লেভ, অলিম্পিক ভিলেজ ও অন্যান্য সুবিধার জন্য এই জমি ব্যবহার করা হবে।
সরকার আশ্রমগুলোর জন্য বিকল্প জমির ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জমি হস্তান্তর ও ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয় চূড়ান্ত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার আরেকটি প্রতিবেদন অনুসারে, এই অলিম্পিক্স আয়োজনে ভারতের সম্ভাব্য ব্যয় হতে পারে আনুমানিক ৩৪,৭০০ কোটি থেকে ৬৪,০০০ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিক্সের (৩২,৭৬৫ কোটি টাকা) চেয়েও বেশি। গুজরাট ছাড়াও ভোপাল, গোয়া, মুম্বাই ও পুণেতে বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারত ছাড়াও কাতার, সৌদি আরব সহ ১০টির বেশি দেশ ২০৩৬ অলিম্পিক্স আয়োজনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে আয়োজক নির্বাচন ২০২৬ সালের আগে হওয়ার সম্ভাবনা কম।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ধর্মগুরু আশারাম বাপুর বিরুদ্ধে নিজেরই আশ্রমের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রাজস্থানের জয়পুর আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তার। এরপর ২০২২ সালে প্রথম বার রাজস্থান হাইকোর্টে জামিনের আর্জি জানান তিনি।
২০২৩ সালে উচ্চ আদালত সেই আবেদন খারিজ করলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সে বছরই সুরাটের এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে আশারামের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সেপ্টেম্বরে তার জামিনের আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালত। এরপর চলতি বছরের শুরুতে দুই মামলাতেই অন্তর্বর্তী জামিন পান তিনি। সম্প্রতি তার সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এই মুহূর্তে জোধপুর সেন্ট্রাল জেলে রয়েছেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন