১৯৯১ সালের ১২ আগস্ট - রিচার্ডস-মার্শাল-ডুজন, ওভালে তিন মহারথীর বিদায়

ভিভ রিচার্ডস, ম্যালকম মার্শাল ও জেফ ডুজন একই সঙ্গে টেস্ট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করার আগে ক্রিকেট ইতিহাসে আরও একবার একইসঙ্গে একইদিনে একইদলের তিন কিংবদন্তীর বিদায় নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ভিভ রিচার্ডস, ম্যালকম মার্শাল ও জেফ ডুজন
ভিভ রিচার্ডস, ম্যালকম মার্শাল ও জেফ ডুজনফাইল ছবি

১৯৯১ সালের ১২ ই আগস্ট। অর্থাৎ ৩১ বছর আগে আজকের দিন। ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে তৈরি হয়েছিলো এক গভীর শূন্যতা। আর হবেই না বা কেনো! একইসঙ্গে একইদিনে একটি দলের সেরা ব্যাটসম্যান, সেরা বোলার এবং সেরা উইকেটকিপার অবসর নিলে দলের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কেমন হয় তা স্পষ্ট। আজকের এই দিনেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটের 'ত্রিরত্ন'- ভিভিয়ান রিচার্ডস, ম্যালকম মার্শাল ও জেফরি ডুজনকে।

বিশ্ব কাঁপানো এই তিন ক্যারিবিয়ান মহারথী বিদায়ী ম্যাচে নিজেদের তুলে ধরতে পারেননি। হয়তো ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ভারাক্রান্ত মনে নিয়ে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। রিচার্ডস করেছিলেন ৬০ রান। ম্যালকম মার্শাল পেয়েছিলেন ১ উইকেট। আর উইকেটের ডুজন ধরেছিলেন ১টি ক্যাচ। ইংল্যান্ডের কাছে ৫ উইকেটে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই দল। তবে তিন মহারথী যখন বিদায় নিলেন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে তাঁদের পরিসংখ্যান ছিল এরকম, ভিভিয়ান রিচার্ডস - সবচেয়ে বেশি রান, ম্যালকম মার্শাল - সবচেয়ে বেশি উইকেট, ডুজন - সবচেয়ে বেশি ডিসমিসাল।

বিদায়ের সময় ১২১ টেস্টে স্যার ভিভ রিচার্ডসের রান সংখ্যা ৫০.২৩ গড়ে ৮৫৪০। সেইসময় তাঁর চেয়ে রান বেশি কেবল সুনীল গাভাসকার এবং অ্যালান বর্ডারের। ম্যালকম মার্শালের ঝুলিতে তখন ৩৭৬ টি উইকেট। যার মধ্যে ২২ বার ৫ উইকেট নেওয়ার মালিক তিনি। ওইসময় তাঁর চেয়ে বেশি উইকেট কেবল রিচার্ড হ্যাডলি আর ইয়ন বোথামের। অন্যদিকে ডুজনের দখলে তখন ৩৩২২ রান এবং ২৭২ ডিসমিসাল। তখন তাঁর চেয়ে বেশি ডিসমিসাল শুধু রডনি মার্শের।

ভিভ রিচার্ডস, ম্যালকম মার্শাল ও জেফ ডুজন একই সঙ্গে টেস্ট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করার আগে ক্রিকেট ইতিহাসে আরও একবার একইসঙ্গে একইদিনে একইদলের তিন কিংবদন্তীর বিদায় নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ১৯৮৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিডনি টেস্ট খেলার পর টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন তিন অজি কিংবদন্তী গ্রেগ চ্যাপেল-ডেনিস লিলি-রডনি মার্শ। রেকর্ড গড়ে আর মাইলফলক ছুঁয়ে শেষ টেস্টে আলো ছড়িয়েছিলেন তিনজনই। প্রথম বোলার হিসেবে ডেনিস লিলি ছুঁয়েছিলেন ৩৫০ উইকেটের মাইলফলক। রডনি মার্শ ৯৬তম টেস্ট খেলতে নেমে ভেঙে দিয়েছিলেন উইকেটকিপার হিসেবে অ্যালান নটের সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলার রেকর্ড। অভিষেক টেস্টের মতো শেষ টেস্টেও সেঞ্চুরি করেছিলেন গ্রেগ চ্যাপেল। জিতেছিলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। টেস্ট ক্রিকেটে বোলার-উইকেকিপার যুগলবন্দিতে সবচেয়ে বেশিবার ব্যাটসম্যানের উইকেট নেওয়ার রেকর্ড এখনো এই দুজনের। স্কোরকার্ডে ‘ক মার্শ ব লিলি’ লেখা হয়েছে মোট ৯৫ বার। কাকতালীয় ভাবে অবসর নেওয়ার সময় ডেনিস লিলির ঝুলিতে তখন সর্বোচ্চ ৩৫৫ উইকেট, অন্যদিকে মার্শের দখলেও তখন ঠিক ৩৫৫ টি ডিসমিসাল।

এরপর রিচার্ডস-মার্শাল-ডুজন ত্রয়ী অবসর নেওয়ার পর ২০০৭ সালে ফের তিন কিংবদন্তী অবসর নেন একসাথে। সিডনিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ইতি টানেন শেন ওয়ার্ন, গ্লেন ম্যাকগ্রাথ এবং জাস্টিন ল্যাঙ্গার। তিনজনেই তখন ক্রিকেট ইতিহাসের জীবন্ত কিংবদন্তী।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in