

চাকরি খোঁজা ছেড়ে দিয়েছেন ভারতের প্রায় ৯০০ মিলিয়ন বা ৯ কোটি শ্রমশক্তির বড়ো অংশ। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমির এক সাম্প্রতিক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থার মতে, এই সংখ্যার মধ্যে অধিকাংশই মহিলা। যারা কাজ চেয়েও সঠিক ধরণের কাজ না পেয়ে হতাশ হয়ে কাজের সন্ধান করা ছেড়ে দিয়েছেন এবং তাঁরা দেশের শ্রমশক্তি থেকে সম্পূর্ণরূপে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে ২০১৭ থেকে ২০২২-এর মধ্যে দেশে শ্রম অংশগ্রহণ হার কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ। ৪৬ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৪০ শতাংশে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে দেশের শ্রমশক্তি থেকে ২ কোটি ১০ লক্ষ মহিলা সম্পূর্ণভাবে বেরিয়ে গেছেন বলে ওই সমীক্ষা রিপোর্ট থেকে জানা গেছে। সিএমআইই-র তথ্য অনুসারে যে ৯ কোটি মানুষ আর কাজ খুঁজছেন না তাদের অর্ধেকের বেশিই এখনও কর্মক্ষম।
ম্যাককিনসে গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, যুবসমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য, ভারতকে ২০৩০ সালের মধ্যে অ-কৃষিজাত ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৯ কোটি নতুন চাকরি তৈরি করতে হবে। এর জন্য বার্ষিক জিডিপির ৮ শতাংশ থেকে ৮.৫ শতাংশ বৃদ্ধি প্রয়োজন। তরুণ কর্মশক্তিকে কাজে লাগাতে না পারলে ভারতকে উন্নত-দেশের মর্যাদার পথে ঠেলে দিতে পারে।
ভারতে শ্রমশক্তির হ্রাস মহামারীর আগে থেকেই শুরু হয়েছে। ২০১৬ সালে, কালো টাকা উদ্ধার করার প্রয়াসে সরকার ৫০০ এবং ১০০০ টাকার কারেন্সি নোট নিষিদ্ধ করার পরে, অর্থনীতিতে জোর ধাক্কা লাগে। একই সময়ে দেশব্যাপী বিক্রয় করের রোল-আউট আরও একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। অর্থনীতিবিদদের মতে ভারত একটি বিধিবহির্ভূত অর্থনীতি থেকে বিধিবদ্ধ অর্থনীতিতে রূপান্তরের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে লড়াই করেছে।
যদিও শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ হ্রাসের ব্যাখ্যা ভিন্ন। বেকার ভারতীয়রা প্রায়ই ছাত্র বা গৃহিণী হয়। তাদের অনেকেই ভাড়ার আয়, পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের পেনশন বা সরকারী প্রাপ্ত অর্থের মাধ্যমে বেঁচে থাকে। দ্রুত প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের বিশ্বে, অনেকেই বর্তমান বাজারযোগ্য দক্ষতার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে।
মহিলাদের ক্ষেত্রে এই কারণগুলি কখনও কখনও বাড়িতে নিরাপত্তা বা সময়সাপেক্ষ দায়িত্বগুলির সাথে সম্পর্কিত। যদিও মহিলারা ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করেন, কিন্তু দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনে মাত্র ১৮ শতাংশ অবদান রাখেন মহিলারা, যা বিশ্বব্যাপী গড়ের প্রায় অর্ধেক।
CMIE-এর মহেশ ব্যাস জানিয়েছেন, "মহিলারা শ্রমশক্তিতে বেশি সংখ্যায় যোগদান করেন না কারণ প্রায়শই তাঁরা চাকরি পান না।" "উদাহরণস্বরূপ, পুরুষরা তাদের চাকরিতে পৌঁছানোর জন্য ট্রেন বদল করতে ইচ্ছুক থাকলেও মহিলারা তা করতে ইচ্ছুক হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই ঘটনা খুব বড় আকারে ঘটছে।"
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন