
রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঢল নেমেছিলো তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদানের। জেলায় জেলায় রীতিমত যোগদান মেলা করে তৃণমূল বা অন্য দল থেকে বিজেপিতে যোগদান করানো হয়েছিলো। সে তালিকাও দীর্ঘ। এর আগের কয়েক বছরে একইভাবে রাজ্য সাক্ষী ছিলো বিভিন্ন দল ভাঙিয়ে তৃণমূলের দল ভারি করার দৃশ্যে। সেখানে সিপিআই(এম), কংগ্রেস, বিজেপি - কেউ বাদ যায়নি। নির্বাচন পরবর্তী বঙ্গে এবার উলটপুরাণ। নির্বাচনের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা নেত্রীদের এবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ‘ঘরবাপসি’র পালা।
দিনকয়েক আগেই ই-মেল করে বিজেপি ছেড়েছিলেন একদা তৃণমূল বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস। এছাড়াও সম্প্রতি বিজেপি ছেড়েছেন কোচবিহারের বিজেপি নেতা ভূষণ সিংহ। উল্লেখযোগ্য ভাবে আজই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে আবেগঘন ট্যুইট করেছেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সোনালী গুহ। প্রসঙ্গত, এঁরা সকলেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পেরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। যদিও বিজেপিও এদের অনেককেই প্রার্থী করেনি।
অন্যদিকে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েই যারা প্রার্থী হয়েছিলেন সেইসব হেভিওয়েট নেতাদের বেশিরভাগই পরাজিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া, রুদ্রনীল ঘোষ, রথীন চক্রবর্তী, জীতেন্দ্র তেওয়ারি, প্রবীর ঘোষাল। ব্যতিক্রম শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়, মিহির গোস্বামী।
রাতারাতি বিজেপিতে যোগ দিয়েই প্রার্থী হয়ে যাওয়া একাধিক প্রার্থীকে নিয়ে ক্ষোভ ছিলো দলের অন্দরেই। দীর্ঘদিনের বিজেপি কর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে একাধিক জায়গায় প্রার্থী নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিজেপির নেতা কর্মীরা।
নির্বাচনে সরকার গঠন নিয়ে আশাবাদী হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে অনেকটাই দূরে থামতে হয়েছে বিজেপিকে। গণ্ডগোলের শুরু এরপরেই। বহু জায়গাতেই পরাজিত প্রার্থীদের ময়দানে দেখা যাচ্ছেনা। অনেকেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে ইচ্ছুক। অভিযোগ, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া একাধিক প্রার্থী নিজেদের ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। যে প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, দলে এসেই যারা প্রার্থী হয়ে গেছিলেন তাঁদের অনেকেই হেরে যাওয়ার পর ফোন ধরছেন না। এদের দলে থাকা না থাকা সমান। অনেকে চলে যাচ্ছেন। আরও অনেকে যাবেন।
দলের রাজ্য সভাপতির কথাতেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, আগামী দিনে বিজেপিতেও ভাঙন শুরু হবার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে রাজ্যবাসী যেভাবে দলবদল দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলো, নির্বাচনের পর আগামীদিনে হয়তো খুব শীঘ্রই আরও একবার রাজ্যে শুরু হতে চলেছে দলবদল পর্ব।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন