TMC-Congress: কংগ্রেস ভাঙার তৃণমূলী কৌশলে ধাক্কা বিরোধী জোটে, পরোক্ষ লাভ বিজেপির? উঠছে প্রশ্ন

বেশ কয়েক মাস ধরে তৃণমূল কংগ্রেস লক্ষ্যবস্তু করে চলেছে কংগ্রেসকে। কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ, বিধায়ক থেকে শুরু করে নেতা কর্মীদের নিজেদের দলে নিয়ে আসার কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
ছবি প্রতীকী
ছবি প্রতীকীগ্রাফিক্স সুমিত্রা নন্দন

সম্মিলিত বিরোধী জোট এখন বিশবাঁও জলে। কংগ্রেস তৃণমূলের টানাপোড়েনের মাঝে বিজেপি বিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একদিকে কংগ্রেসের জায়গা দখল করে বিজেপি বিরোধী জোটের নেতৃত্ব চাইছে তৃণমূল। অন্যদিকে কংগ্রেসের অভিযোগ-বিরোধী ঐক্য ভেঙে বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছে তৃণমূল। অধীর চৌধুরী আবার একধাপ এগিয়ে বলছেন, “কয়লা কেলেঙ্কারিতে ইডি-সিবিআই তদন্তের হাত থেকে ভাইপোকে বাঁচতে মোদীজীর সাথে সেটিং করে ফেলেছেন দিদি”।

বেশ কয়েক মাস ধরে তৃণমূল কংগ্রেস লক্ষ্যবস্তু করে চলেছে কংগ্রেসকে। কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ, বিধায়ক থেকে শুরু করে নেতা কর্মীদের নিজেদের দলে নিয়ে আসার কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আসাম, গোয়া, মেঘালয়, ত্রিপুরা, এমনকি হরিয়ানার মতো কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে কংগ্রেস ভাঙার কাজ করে যাচ্ছে তারা। তাঁদের কাজে রীতিমত হতবাক কংগ্রেস সহ বিজেপি বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি। প্রশ্ন হচ্ছে, এইভাবে কী আদৌ বিজেপি বিরোধী ঐক্য সম্ভব? তৃণমূল মানুক বা না মানুক এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। সেই কংগ্রেসকে দুর্বল করার পিছনে কী কারণ থাকতে পারে? রাজনৈতিক মহলের মতে তৃণমূলের এই পদক্ষেপে পরোক্ষভাবে বিজেপিই লাভবান হবে। ত্রিপুরার সাম্প্রতিক পুরসভা নির্বাচনে যা অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গেছে।

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কলকাতায় ব্রিগেড ময়দানে ২৩টি বিরোধী দলের নেতাদের একত্রিত করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে দারুণ সাফল্যের পর থেকেই তৃণমূল বাইরের রাজ্যে সংগঠন বিস্তার করতে শুরু করেছে এবং কংগ্রেসকে বিরোধী জোটের নেতৃত্ব মানতে অস্বীকার করছে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা – তৃণমূল বাংলায় অভাবনীয় সাফল্যের পর সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কংগ্রেসের জায়গা নিতে চাইছে। আর এটা করতে গিয়েই তারা কংগ্রেসের ঘর ভাঙছে। যা বিরোধী ঐক্যের কাছে শুধু একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্তই নয়, তৃণমূলের বিশ্বাসযোগ্যতাতেও প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।

গোয়া কিংবা মেঘালয়। এখানে বিজেপির সরাসরি প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। সেখানে ঠিক নির্বাচনের আগে ঠিক কী কারণে তৃণমূল পৌঁছেছে, তা নিয়ে কংগ্রেস বরাবর প্রশ্ন তুলে আসছে। কংগ্রেসের সরাসরি অভিযোগ – বিরোধী ভোট ভাগাভাগি করে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে এসেছে তৃণমূল। বিশেষত মেঘালয়ের ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে দু’দলের টানাপড়েন আরও বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, তৃণমূল শুধু নেতা জোগাড় করেই সংগঠন বাড়াতে চাইছে। কিন্তু এক্ষেত্রে সবথেকে বড়ো প্রশ্ন এই রাজ্যগুলিতে তৃণমূল স্তরে তৃণমূলের কোনও সংগঠন অথবা পরিচিতি নেই। শুধু নেতা ভাঙিয়ে কতদূর এগোনো যাবে?

সম্প্রতি, মুম্বাই সফরে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউপিএ-র অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, নজিরবিহীনভাবে রাহুল গান্ধীকেও ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ করেছেন। একইভাবে বর্তমানে তৃণমূলের রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোরও কংগ্রেসকে খোলাখুলি আক্রমণের রাস্তায় হেঁটেছেন। যা কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দলের কাছেই কাম্য নয়। অন্তত বিরোধী ঐক্যের স্বার্থে তো নয়ই। রাহুল গান্ধীকে ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ হত এতদিন বিজেপির দিক থেকে। সেই একই কাজ তৃণমূল করায় ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের একাংশ। অধীর চৌধুরীর অভিযোগ – “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির ‘কংগ্রেস মুক্ত ভারত’-এর অ্যাজেন্ডা নিয়ে চলছেন।”

ছবি প্রতীকী
Mamata-Adani Meet: কৃষকদেরও চাই, আদানি-আম্বানিদেরও চাই - একসঙ্গে দুটোই কিভাবে? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in