সাংসদ, বিধায়কদের বিরুদ্ধে থাকা মামলার বিস্তারিত বিবরণ জমা দিতে কেন্দ্রকে 'শেষ সুযোগ' শীর্ষ আদালতের

বর্তমান এবং প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনো কেন্দ্রীয় সংস্থা বা সিবিআই-তে অভিযোগ থাকলে তা জানানোর জন্য মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে "শেষ সুযোগ" দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট ফাইল ছবি সংগৃহীত

বর্তমান এবং প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনো কেন্দ্রীয় সংস্থা বা সিবিআই-তে অভিযোগ থাকলে তা জানানোর জন্য মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে "শেষ সুযোগ" দিয়েছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রকে এই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনার নেতৃত্বাধীন বিচারপতি ভিনিত শরণ এবং বিচারপতি সূর্যকান্তের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে বলেন, "আমরা এই প্রতিবেদনগুলো সংবাদপত্রে পড়ছি। তারা (সরকার) আমাদের কিছু পাঠায় না। আমরা সন্ধ্যায় সবকিছু পেয়ে যাই। .. আমরা কিছুই জানি না।"

প্রধান বিচারপতি এন ভি রমানা আজ বলেন যে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে আদালত কেন্দ্রকে বিস্তারিত স্ট্যাটাস রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সময় দিয়েছিল, তারপর অক্টোবরে আবারও সময় দেওয়া হয় এবং আজও পরিস্থিতি একই।

এর উত্তরে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বলেন: "আমি এই বিষয়ে সহমত যে আমাদের দিক থেকে ঘাটতি আছে। আমরা ইডি-র তরফে গতকাল একটি প্রতিবেদন দায়ের করেছি। আমি সিবিআই ডিরেক্টরের কাছেও জরুরি ভিত্তিতে এই বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করার ওপর জোর দিয়েছি।"

এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, "আমরা আমাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশের জন্য আর কী বলব। আমাদের জানানো হয়েছিলো কেন্দ্র সাংসদ এবং বিধায়কদের বিরুদ্ধে থাকা মামলা নিয়ে উদ্বিগ্ন।"

এই প্রসঙ্গে আদালতে নিযুক্ত অ্যামিকাস কিউরি সিনিয়র অ্যাডভোকেট বিজয় হানসারিয়া জানান যে, বিষয়টি খুবই বিরক্তিকর। কারণ মামলাগুলো ৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিচারাধীন।

বেঞ্চ উল্লেখ করে যে এক বছরেরও বেশি সময় পরে বিষয়টি গ্রহণ করা হয়েছে। "অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। এই মামলাগুলি পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করতে হবে। এইভাবে এই কাজ করা সম্ভব নয়।"

এদিন কেন্দ্রের পক্ষে তুষার মেহতা আদালতের নির্দেশ মেনে চলার জন্য শেষ সুযোগ চেয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি তাঁকে জানান: "আমরা আপনাকে দু’সপ্তাহ সময় দিচ্ছি, এটাই শেষ সুযোগ।"

বেঞ্চ এও নির্দেশ দিয়েছে যে সাংসদ/বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টের অনুমোদন ছাড়া প্রত্যাহার করা যাবে না। এই আদেশ রাজনৈতিক কারণে মামলা প্রত্যাহারে রাজ্যের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।

বেঞ্চ আরও নির্দেশ দেয় যে অভিযুক্ত সংসদ সদস্য এবং বিধায়কদের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি করা বিশেষ আদালতের বিচারকদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বদলি করা যাবে না। আগামী ২৫ আগস্ট এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট স্নেহা কলিতার সহযোগিতায় হানসারিয়া বলেন যে, বিভিন্ন রাজ্য সরকার বিভিন্ন কারণে বর্তমান এবং প্রাক্তন আইন প্রণেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করেছে।

প্রতিবেদনে কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং মহারাষ্ট্রের ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ৩২১ এর অধীনে জারি করা আদেশের উল্লেখ করা হয়।

আদালত জানিয়েছে: "এটি উল্লেখ করার যোগ্য যে, ধারা ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ৩২১-এর অধীনস্থ ক্ষমতা, যা জনস্বার্থে ব্যবহার করা হয়, তা কখনোই বহিরাগত এবং রাজনৈতিক বিবেচনার জন্য ব্যবহার করা যায় না। বৃহত্তর জনস্বার্থে কাজ করুন।"

২০২০ সালের আগস্টে, কর্ণাটক সরকারের একটি আদেশে, ৬১ টি ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ জারি করা হয়েছিল, যার মধ্যে অধিকাংশ মামলাই বর্তমান বিধায়কদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল।

হানসারিয়া আরও বলেন যে, উত্তরপ্রদেশ সরকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ৭৬ টি মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়েছে, যার মধ্যে সঙ্গীত সোম, কপিল দেব, সুরেশ রানা এবং সাধ্বী প্রাচীর বিরুদ্ধে মুজাফফরনগর দাঙ্গার মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মহারাষ্ট্র সরকার গত ডিসেম্বরে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে হওয়া রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অ্যাডভোকেট হানসারিয়া ২০১৬ সালে অ্যাডভোকেট অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়ের দায়ের করা এক পিটিশন উদ্ধৃত করে ফাস্ট ট্রাক ক্রিমিনাল ট্রায়ালের মাধ্যমে বর্তমান এবং প্রাক্তন সাংসদ এবং বিধায়কদের বিরুদ্ধে বিচারের দাবি জানান।

- with inputs from IANS

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in